কৃষ্ণকুমার দাস: পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) নির্দল ‘কাঁটা’ উপড়ে ফেলতে নরমে-গরমে কৌশল নিল রাজ্যের শাসকদল। দলের প্রার্থীপদ না পেয়ে যাঁরা নির্দলের (Independent) হয়ে মনোনয়ন পেশ করেছেন, তাঁদের তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হল একাধিকবার। অন্যথায় দল কড়া শাস্তির পথে হাঁটবে। নির্দলের হয়ে জিতলেও পরে আর দলে ফেরার রাস্তা চিরতরে বন্ধ তাঁদের জন্য। পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কালীঘাটে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিল শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূলে প্রার্থীপদ না পেয়ে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ানো, জয়লাভ – এসব নতুন কিছু নয়। পরে সেসব জনপ্রতিনিধিরা কোনও না কোনও দলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাতে দলের লাভ-ক্ষতির অঙ্কে অনেকটাই এদিক-ওদিক হয়ে যায়। নির্দল প্রার্থীদের নিয়ে বরাবরই দল যথেষ্ট কড়া। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে একাধিকবার পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল প্রার্থীদের নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। বারবার বলেছেন, নির্দল হয়ে লড়াই করলে দল বহিষ্কার করবে।
[আরও পড়ুন: দিঘার হোটেলের তিনতলা থেকে নিচে পড়ে কলকাতার পর্যটকের মৃত্যু, দুর্ঘটনা নাকি খুন?]
তবে শনিবার কালীঘাটে পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশল নিয়ে বৈঠকে সুর খানিকটা নরম করল দল। প্রথমে অনুরোধ, পরে শাস্তি। সেইমতোই এদিন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ”নির্দল হয়ে যাঁরা মনোনয়ন পেশ করেছেন, তাঁদের কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিন। দল যে প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে, তাঁদের সমর্থন করুন, প্রচারে নামুন।” এরপরই সুর আরও কঠিন করে তিনি বলেন, ”দলের অনুরোধ না মানলে কিন্তু দল খুব কড়া পদক্ষেপ নেবে। নির্দল হয়ে আপনারা ভোটে জিতলেও দলে আর ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। চিরকালের মতো দলে ঢোকার দরজা-জানলা সব বন্ধ। বাইরেই থাকতে হবে আপনাদের।”
[আরও পড়ুন: মনোনয়নের পর স্ক্রুটিনিতেও অশান্তি, কোচবিহারে ফের ‘আক্রান্ত’ নিশীথ প্রামাণিক]
উল্লেখ্য, গত বারের পুরভোটে নির্দল কাঁটা উপড়ে ফেলতে একই বার্তা দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তারপরেও দেখা যায়, প্রচুর নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন পেশ করেছেন এবং জিতেওছেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটের স্ক্রুটিনি চলছে। তারমধ্যেই স্পষ্ট হচ্ছে, নির্দল প্রার্থীদের সংখ্যা। এসব দিক মাথায় রেখেই আগামী ২০ জুন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের মধ্যে তাঁদের প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের ‘অনুরোধ’ করল তৃণমূল।