সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ‘ঘরের ছা’ বটে। এভাবেই তাঁকে চেনেন আদিবাসী এলাকার মানুষজন। অনর্গল সাঁওতালি (Santhali) ভাষায় কথা বলার পাশাপাশি অলচিকি হরফে লেখালেখিতেও পটু। অনেকে ভুল করে তাকে সাঁওতালি মানুষ ভাবেন। আর এতে তাঁর আনন্দ বাড়ে বই কমে না। খুব ভালভাবে সাঁওতালি জানার সুবাদে তাঁকে আদিবাসীদের (Tribal) শিক্ষা সংগঠন ভারত জাকাত সাঁওতালি পাঠুয়া গাঁওতার সদস্য হিসেবে রেখেছেন সংগঠনের লোকজন। ঝাড়গ্রামের (Jhargram)আদিবাসী মহলে অতি জনপ্রিয় এহেন এক ব্যক্তিকেই এবার শাসকদল তাদের দলীয় টিকিটে জেলা পরিষদের প্রার্থী করেছে। বছর তেতাল্লিশের কার্তিক শিট তৃণমূলের হয়ে প্রচারে গিয়েও জনসংযোগ সারছেন সাঁওতালি ভাষায়।
ঘরের ছেলে, ভূমিপুত্র কার্তিক তাঁদের চেনা লোক। প্রথমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) দাঁড়িয়ে তাঁর একটাই কথা – ভোটে জিতে ১৮ ঘন্টা মানুষের পাশে থেকে পরিষেবা দেবেন। কার্তিক তাঁর প্রচারে পাশে পেয়েছেন রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী তথা ঝাড়গ্রামের জনপ্রিয় নেত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে (Jhargram)। আর তা প্রচারে আরও খানিকটা এগিয়ে রাখছে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: ছাগলকে বলির ‘শাস্তি’! মৃত ছাগলের চোখই প্রাণ কাড়ল ব্যক্তির, কিন্তু কীভাবে?]
কার্তিক বরাবরই দক্ষিণপন্থী। কলেজ জীবনে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) ছাত্র নেতা ছিলেন। দু’বার জেএসএফের হয়ে জিতেও ছিলেন। বরাবরই তাঁর আদিবাসী মানুষজন, তাদের ভাষা, সংস্কৃতির প্রতি বিশেষ আগ্রহী আছে। আর তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিলেন সাঁওতালিতে। আদিবাসী ছেলেমেয়েরা যাতে নিজেদের ভাষায় লেখাপড়া করতে পারে, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে। তিনি জামবনি ব্লকের সানকিশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাংলার পাশাপাশি সাঁওতালি ভাষাতেও শিক্ষা দান করেন।
[আরও পড়ুন: বিশ্বজয়ীর হাতে সোনালি গ্লাভস, মার্টিনেজকে মিষ্টি উপহার ফেলু মোদকের]
ফলে কার্তিক ‘স্যর’কে ঘিরে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের মানুষদের একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে। কার্তিকের বাড়ি বিনপুর ১ ব্লকের বিনপুর অঞ্চলের নান্দা গ্রামে। তিনি ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১২ নম্বর আসনে দাঁড়িয়েছেন। বিনপুর, আঁধারিয়া, বেলাটিকড়ি ও নেপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৬২ টি বুথ রয়েছে তার আসনের অধীন। আর এইসব বুথগুলিতে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দাপিয়ে প্রচার করছেন। কার্তিক শিট বলেন, ”মানুষের কাছে হাতজোড় করে বলছি, সারা বছর তাঁদের পাশে থাকবে। রাজ্য সরকার যেসব প্রকল্পগুলি গ্রাম বাংলার মানুষকে দিয়েছেন সেই সব প্রকল্প যাতে মানুষ মসৃণভাবে পান সেই জন্য ১৮ ঘন্টা কাজ করব।”