সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Poll) তিনদিন আগেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি চলছে। মঙ্গলবারও রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত রইল মুর্শিদাবাদ ও দুই ২৪ পরগনা। কোথাও কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে তো কোথাও চলল বোমাবাজি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাস্তায় নামল কেন্দ্রীয় বাহিনী। গ্রেপ্তার আইএসএফ প্রার্থী-সহ অন্তত ২।
তৃণমূল আইএসএফ সংঘর্ষে বোমাবাজির অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ালো দেগঙ্গায়। মঙ্গলবার দুপুরে দেগঙ্গার চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়কোলা গ্রামের এই ঘটনায় পাঁচজন জখম হয়েছে বলে খবর। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ আইএসএফ প্রার্থী-সহ দুজনকে আটক করেছে। এরপর বিকেলে ফের উত্তপ্ত হয় দেগঙ্গা। বিকেলে চাকলা পঞ্চায়েতের বক্সিরহাটি গ্রামে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে মিছিল হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই মিছিল চলাকালীনই আচমকা আইএসএফ এবং সিপিএমের কর্মীরা জোট হয়ে হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশের সামনেই ইটবৃষ্টি চলে বলেও অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় তৃণমূলের মিছিলে থাকা বাইক গাড়ি। এই ঘটনায় তৃণমূলের ১০জন জখম হয়েছেন বলেই দাবি নেতৃত্বর।
[আরও পড়ুন: চাকরি দেওয়ার নামে তোলাবাজি! বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকেই ধৃত হাই কোর্টের কর্মী]
অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ও উস্তি থানার সীমান্তবর্তী এলাকা হটুগঞ্জে আইএসএফ ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। হটুগঞ্জ বাজারে দুপক্ষের মধ্যে কটুক্তি বিনিময় হয়। দুদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি শেষপর্যন্ত সংঘর্ষের আকার নেয়। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে হটুগঞ্জের হেলেগাছি গ্রামে। দুপক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি ও বোমাবাজিও হয় বলে অভিযোগ। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঘটনাস্থলে আসে উস্তি ও কুলপি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। দু’পক্ষের ১২ জন আহত হন বলে দু’দলের অভিযোগ। এদিকে আতঙ্কে এলাকার দোকান পাট সব বন্ধ হয়ে যায়। পথ চলতি সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দেন।
ভগবানগোলাতে একাধিক জায়গায় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভগবানগোলার বিভিন্ন এলাকা। পরবর্তীতে কেন্দ্র বাহিনীর গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ করে মঙ্গলবার সিপিএম ও কংগ্রেস যৌথভাবে ভগবানগোলা থানা ঘিরে অবস্থান বিক্ষোভ করে। অবশ্য এ বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। ঘণ্টা তিনেক পর পুলিশের আশ্বাস পেয়ে অবস্থান তুলে নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘পরিস্থিতি অস্বাভাবিক’, বুথে ৫০:৫০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ চায় হাই কোর্ট]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে ভগবানগোলা থানার কুঠিরামপুর অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি মহাসিন আলির সঙ্গে ফ্লেক্স ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বচসা হয় ভগবানগোলা জেলা পরিষদের ২৭ নম্বর আসনের তৃণমূল প্রার্থী রিয়াত হোসেন সরকার রাজেসের। কংগ্রেসের অভিযোগ এই বচসার জেরে স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি মোস্তফা শেখ ও রাজেশের নেতৃত্বে রাত্রি বারোটা নাগাদ চংটা পাহাড়পুর এলাকায় কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের বাড়ির ওপর হামলা করা হয়। এই হামলায় পাঁচটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ।