অর্ণব আইচ: খাস কলকাতায় নাবালিকা বিয়ে! নিজের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে ট্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করল ১৪ বছরের কিশোরী। ওই কিশোরীর বাবা-মাকে বোঝানো চেষ্টা করছে পুলিশ। নারীকল্যাণ সমিতির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে পুলিশ। তবে বোনের পাশে দাঁড়িয়েছে দাদা। প্রয়োজনে ওই কিশোরীর যাবতীয় দায়িত্বও নিতে রাজি তিনি। এদিকে নাবালিকার বাবা-মায়ের দাবি, আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। তবে এখনই শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল না। বিয়ের পরেও মেয়েকে বাড়িতেই রাখতেন।
[কোটা থাকলেও রেলে প্রতিবন্ধী কর্মীদের নেই বিশেষ সুবিধা বা সম্মান]
গরিব পরিবার। মেয়ের দায়িত্ব সামলাতে অপারগ। তাই আঠেরোর আগেই মেয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন বাবা-মা। এমন ঘটনা এ বাংলায় নতুন নয়। তবে সেসব ঘটনা মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া জেলায় ঘটে। নাবালিকা বিয়ে রুখতে প্রশাসনের উদ্যোগে খামতি নেই। নাবালিকা বিয়ে রুখতে কন্যাশ্রী প্রকল্পে ছাত্রীদের আর্থিক সাহায্যও করে রাজ্য সরকার। কিন্তু, খাস কলকাতায়ও যে ‘বিবাহযোগ্যা’ নাবালিকারা আছে, সে খবর প্রশাসনের কাছে ছিল না। হতবাক সকলেই।
[যাদবপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টারে বিকৃতি, কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত শিক্ষামন্ত্রীর]
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালিকা ট্যাংরা এলাকায় বাসিন্দা। বয়স মাত্র ১৪। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সে। পরিবারটি খুবই গরিব। ওই নাবালিকার বাবা ঘরামির কাজ করেন। ছয় ছেলে ও তিন মেয়ের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। ছেলেরাও খুব বেশি রোজগার করেননি। তাই এলাকার এক যুবকের সঙ্গে চোদ্দ বছরের মেয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন বাবা-মা। ২৫ জানুয়ারি বিয়ের দিনও পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এখনই বিয়ে করতে একেবারেই রাজি নয় ওই কিশোরী। তার চোখে আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন! অনেক বুঝিয়ে বাবা-মাকে নিরস্ত্র করতে পারেনি সে। এরপরই স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই কিশোরী। তাদের পরামর্শে মঙ্গলবার সকালে দাদাকে নিয়ে সটান হাজির ট্যাংরা থানায়। গোটা ঘটনা জানিয়ে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে নাবালিকা মেয়ের বিয়ের দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে সে। কিশোরী বোনের পাশে দাঁড়িয়েছে দাদাও। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বোনের যাবতীয় দায়িত্ব নিতেও রাজি তিনি।
[বাঘাযতীন স্টেশনে বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বন্ধ ট্রেন চলাচল]
এদিকে, অভিযোগ পাওয়ার পর, নারীকল্যাণ সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্যাংরা থানার পুলিশ। অভিযোগকারীর বাবা-মায়ে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, আর্থিক কারণেই নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। তবে এখনই তাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না। বিয়ের পর মেয়েকে বাড়িতে রেখে পড়াশোনা করাতেন তাঁরা।
[বিরিয়ানির সঙ্গে ঘুমের মাদক পাচার হয়েছিল আলিপুর জেলে?]
ছবি- প্রতীকী
The post চোখে IPS হওয়ার স্বপ্ন, বিয়ে রুখতে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে থানায় গেল নাবালিকা appeared first on Sangbad Pratidin.