কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: লকডাউন (Lockdown) পর্ব পেরিয়ে রাজ্যের স্কুলগুলি পুরোপুরি খুলতে না খুলতেই আজ, মঙ্গলবার থেকে ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যেই স্কুলের ফি চড়া হারে বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দমদমের (Dumdum) সেন্ট স্টিফেন্স স্কুলে। এবং তা অভিভাবকদের আগাম না জানিয়েই। মঙ্গলবার তার প্রতিবাদে স্কুল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে শামিল হলেন অভিভাবকরা। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে আসলে ছোট ছোট পড়ুয়াদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে তাদের কেরিয়ার। এ নিয়ে এখনও স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অভিভাবকদের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চান। নইলে বাড়তি ফি প্রত্যাহারের দাবিতে এই আন্দোলন চলবে, হুঁশিয়ারি তাঁদের।
গত বছর করোনার (Coronavirus) থাবায় দেশে লকডাউনের জেরে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। নিউ নর্মালে আর পাঁচটি ক্ষেত্রে পরিষেবা চালু হলেও স্কুলে পঠনপাঠন চালু হয়নি। ছোট পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্কুল খুলে দেওয়ার ঝুঁকি নেয়নি রাজ্য সরকার। বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষও খানিকটা একই পথে হেঁটেছিল। এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের স্বাভাবিক প্রত্যাশা ছিল, স্কুলের বার্ষিক ফি বাড়বে না। তা সত্ত্বেও কয়েকটি বেসরকারি স্কুল ফি বৃদ্ধি করায় আন্দোলনের পথে হেঁটেছিলেন অভিভাবকরা। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ফি বাড়ানো চলবে না।
[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন বণ্টন নীতি নিয়ে এবার কেন্দ্রকে তুলোধোনা, ফের মোদিকে চিঠি মমতার]
কোভিড পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে অবশ্য নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য আংশিকভাবে স্কুল খোলা হয়। নির্দিষ্ট করোনাবিধি মেনেই ক্লাস চলছিল। সেসময়েই আচমকা অভিভাবকদের আগাম কোনও নোটিস না দিয়ে ফি ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দেয় দমদমের সেন্ট স্টিফেন্স স্কুল, অভিযোগ এমনই। তাঁদের অভিযোগ, এক ধাক্কায় ২ হাজার টাকা ফি বাড়ানো হয়েছে, যা অনেকের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। অথচ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চেয়ে তাঁরা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে একসঙ্গে হোক শেষ দু’দফার ভোট, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের]
এক অভিভাবিকা বলেন, ”প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু উনি নিচেই নামেননি। এর আগে স্কুলের ফাদার বলেছিলেন যে ৩ বছর ফি বাড়বে না। কিন্তু গত বছরও ফি বেড়েছে, এবছরও বাড়ছে। তাহলে ফাদারের কথার কী দাম রইল?” মঙ্গলবার স্কুলের সামনে অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় দমদম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তা নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে বিষয়টি নিয়ে সমাধানসূত্র বেরতে পারে।