দীপঙ্কর মণ্ডল: এলাকা উন্নয়নে তহবিল খরচে এ রাজ্যের সাংসদরা কি শীর্ষে? হিসাবের খাতা নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক। রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসছে। কমিটির শীর্ষে আছেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। বৈঠক শেষে জানা যাবে তহবিল খরচের নিরিখে কোন কোন সাংসদ শীর্ষে আছেন। সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা উন্নয়নের কাজে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এমপি ল্যাড প্রকল্পে (এলাকা উন্নয়নে সাংসদ তহবিল) রাজ্যের আয়লা কবলিত এলাকায় কেমন কাজ হয়েছে তা ঘুরে দেখার কথা সংসদীয় কমিটির। বুধবার কমিটির সদস্যরা কালীঘাটে পুজো দেন। নবান্ন থেকে তাঁদের জন্য ‘স্পেশাল পুজো’ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ‘রসগোল্লা দিবস’-এ সাংসদদের একটি বিশেষ সংস্থার তৈরি রসগোল্লা উপহার দেওয়া হয়েছে। বাইপাস সংলগ্ন একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক। রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে বৈঠকে থাকবেন। পরিকল্পনা দপ্তর রিপোর্ট তৈরি করে ফেলেছে। আয়লা কবলিত এলাকায় যাওয়ার কথা থাকলেও সংসদীয় কমিটি সুন্দরবন এলাকায় যাচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। কলকাতার কাছাকাছি কয়েকটি প্রকল্প তাঁরা পরিদর্শন করবেন।
[হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
এমপি ল্যাড কমিটি সূত্রে খবর, রাজ্যে তৃণমূলের সাসংদদের একটি বড় অংশ একশো শতাংশেরও বেশি টাকা খরচ করেছেন। তবে প্রদীপের তলায় যেমন অন্ধকার থাকে তেমনই কয়েকজন সাংসদ উন্নয়নের পুরো টাকা খরচ করতে পারেননি। সূত্রের খবর, সাংসদদের টাকা খরচের নিরিখে কেন্দ্রশাসিত এলাকা পন্ডিচেরি শীর্ষে। তারপর আছে দিল্লি। রাজ্যওয়াড়ি হিসাব বলছে, পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে এই হিসাব তৃণমূলকে স্বস্তিতে রাখবে। উন্নয়নের কাজ নিয়ে এ রাজ্যের বিরোধীরা মাঝেমধ্যে প্রশ্ন তোলেন। সংসদীয় কমিটির পরিসংখ্যান বলছে এবার সবার মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী লোকসভা ভোটে তৃণমূল এই পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করবে। এমপিল্যাড সংক্রান্ত রিপোর্ট বলছে, এ রাজ্যের সাসংদদের একটি বড় অংশ বরাদ্দ টাকার চেয়ে বেশি খরচ করেছেন।
সাধারণত এই ধরনের ‘হাই প্রোফাইল’ বৈঠক নবান্ন সভাঘরে হয়। রাজ্যের বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী সংসদীয় কমিটির বৈঠক পাঁচতারা হোটেলে হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, লোকসভার প্রয়াত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এই বিষয়ে বারবার নিষেধ করতেন। এই ধরনের বৈঠক হোটেলে হওয়া ঠিক নয়।” নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদীয় কমিটির সদস্যরা বাইপাসের ওই পাঁচতারা হোটেলেই আছেন। তাঁদের ইচ্ছাতেই সরকারি কনফারেন্স হলের পরিবর্তে হোটেলে বৈঠক হচ্ছে। কমিটির থাকা-খাওয়া-সহ যাবতীয় খরচ বহন করবে কেন্দ্র। এই কারণে বৈঠকের স্থান নিয়ে কোনও আপত্তি করেনি রাজ্য।
[কনস্টেবল অসীম দাম খুনের মামলায় ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড]