অর্ণব আইচ: সিবিআই কি সমাজ সংস্কারক না কি সক্রেটিস? আলিপুর আদালতে প্রশ্ন তুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। একই সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক’ মামলা বলে উল্লেখ করেন। পালটা সওয়ালে সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, অভিযুক্তরা কি স্বাধীনতা সংগ্রামী যে রাজনৈতিক মামলা হবে? দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে পার্থ-সহ অভিযুক্তদের ২২ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
সোমবার সিবিআইয়ের গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তোলা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, চন্দন মণ্ডল, নীলাদ্রি দাস, অশোক সাহাকে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে পেশ করা যায়নি শান্তিপ্রসাদ সিংহকে। অভিযুক্তদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত, বিপ্লব গোস্বামী, সেলিম রহমান, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, সুমন গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের জামিনের আবেদন করেন।
[আরও পড়ুন: দেউলিয়া শ্রীলঙ্কার পথেই বাংলাদেশ! উদ্বেগ প্রকাশ IMF-এর]
পার্থর আইনজীবী মন্তব্য করেন, “সিবিআই কি সমাজ সংস্কারক বা সক্রেটিস? সিবিআই যে তা নয়। এই মামলা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক।” বিরোধিতার করে সিবিআইয়ের আইনজীবী আবেদনে বলেন, “বার বার সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলা হচ্ছে, একটি রাজনৈতিক মামলা। এটা কীভাবে রাজনৈতিক মামলা হতে পারে? এটা দুর্নীতির মামলা মাত্র।” এরপরই তাঁর প্রশ্ন, “অভিযুক্তরা কি স্বাধীনতা সংগ্রামী যে রাজনৈতিক মামলা হবে? এরা দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এরা সরকারি আসনে বসে দুর্নীতি করছে।” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী আবেদনে জানান, এই মামলায় অভিযুক্ত যে স্কুল বিভাগের কর্মীরা রয়েছেন, তরা এখনও চাকরি করছেন, সরকারি বেতনও নিচ্ছেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে শুধু অন্য অভিযুক্তদের জামিন না দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।
এদিন প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায় হাসিখুশিই ছিলেন। কিন্তু আদালত থেকে বের হওয়ার সময় পার্থ জানান, যেভাবে জেলে থাকার কথা, সেভাবে তিনি থাকতে পারছেন না। এদিন আদালতে ধৃত অভিযুক্তদের ছাড়াও বাকি যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তাঁদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, ফের সেই বিষয়ে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিরকারিককে প্রশ্ন করেন বিচারক। আদালত যদি এই চার্জশিট গ্রহণ করত, তবে এই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির ব্যাপারে আদালতও পদক্ষেপ নিত বলে মন্তব্য করেন বিচারক। এই ব্যাপারে তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, যদি প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হয়, তবে প্রত্যেকদিন আদালতেই তাঁদের দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। তদন্ত করার সময় পাবেন না। তাঁদের লোকজনও কম। তাই এখনই সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। বিচারক বলেন, শুনানির সময় সিবিআই সমস্যায় পড়তে পারে।
[আরও পড়ুন: শিয়রে শমন চিন! আমেরিকা থেকে বিপুল অস্ত্র কিনছে তাইওয়ান]
ওএমআর শিট প্রস্তুতকারক নাইসার প্রাক্তন কর্তা ধৃত নীলাদ্রি দাসের আইনজীবী জানান, পরীক্ষার পর ওএমআর শিট এসএসসির অফিসেই ছিল। শুধু তার কপি ছবি তুলে নম্বর মূল্যায়ন করার জন্য দিল্লিতে নাইসার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তাই নীলাদ্রির পক্ষে ওএমআর শিট কারচুপি করা সম্ভব ছিল না। জামিন পেলেও অভিযুক্তরা বাইরে বেরিয়ে তদন্তকে ব্যহত ও নথি নষ্ট করতে পারবেন না বলে আদালতে জানান অভিযুক্তদের আইনজীবীরা।