স্টাফ রিপোর্টার: ট্রাম ঘিরে নস্টালজিয়ার অন্ত নেই এ শহরের। কিন্তু হলে কী হবে! ঘণ্টা বাজিয়ে ট্রাম ছুটলেও গত কয়েক বছরে তেমন যাত্রী দেখা যেত না তাতে। রিলস, ফোটোশুটেই যেন আটকা পড়ছিল সে। অধিকাংশ রুটে ট্রাম তুলে দেওয়ার কারণ হিসাবে যানজট, দুর্ঘটনার পাশাপাশি যাত্রী না হওয়াটাও একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে শহর থেকে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার খবরে যেন তার প্রতি পুরনো আবেগ আবারও বেড়ে গিয়েছে শহরবাসীর। পুজোর আগের কয়েক সপ্তাহের যাত্রীর হিসাব অন্তত তা-ই বলছে। পুজোর শপিং থেকে শুরু করে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে অনেকেই ট্রামে চড়ছেন। আর তার জেরেই ট্রামের ভাঁড়ারে লক্ষ্মী এসেছে।
এখন শহরের দু’টি মাত্র রুটে ট্রাম চলছে। শ্যামবাজার-ধর্মতলা এবং গড়িয়াহাট-ধর্মতলা। হিসাব বলছে, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়ে ১৫টি করে ট্রাম যাত্রী নিয়ে ছুটত। কোনওটি চারটি, কোনওটি পাঁচটি করে ট্রিপ করত। গড়ে দিনে যাত্রী হত ১,৮২৪ জন করে, তার থেকে আয় হত ১০,৯৪৭ টাকা। কিন্তু পরিবহণমন্ত্রী যেদিন জানান, একমাত্র হেরিটেজ রুট রেখে বাকি রুট থেকে ট্রাম তুলে দিতে চায় সরকার। আদালতে তেমনই জানানো হয়েছে। তার পরই বদলে যায় ছবিটা। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রায় দু’সপ্তাহে গড়ে যাত্রী বেড়ে যায় প্রায় ৪০০ জন করে। এই ক’দিন ২২২২ জন করে যাত্রী হচ্ছে গড়ে। যাত্রী বাড়ায় গড়ে আয়ও বেড়ে হয় ১৩,৩৩৪ টাকা।
নিগমের এক কর্তা জানান, আগে দিনে ১৫টি করে ট্রাম নামত, কিন্তু শেষ কয়েকদিনে যাত্রী বাড়ায় সেই জায়গায় একটি ট্রাম বাড়ানো হয়। এখন ট্রাম চলছে ১৬টি করে। ট্রিপও তাই বেড়েছে আরও চার-পাঁচটি। কোনও কোনও ট্রামে ভিড়ও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ইদানিং। সাধারণ মানুষের কথায়, অনেকেই আশঙ্কা করছেন হেরিটেজ রুট রেখে বাকি রুটে ট্রাম বন্ধ হয়ে যাওয়ার। তাই তাঁরা ট্রামের শেষের দিনগুলোয় তার সওয়ারি হতে চাইছেন। তাতেই ভিড় বাড়ছে। এর পাশাপাশি আবার রয়েছে পুজোর কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনের ভিড়। যে কারণে শেষের প্রায় দু’সপ্তাহ আগের তুলনায় ভিড় অনেকটাই বেড়েছে ট্রামে। যাতে খুশি ট্রাম-প্রেমীরাও। তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আদালতে তারা শুধুমাত্র ধর্মতলা থেকে ময়দান পর্যন্ত জয়রাইড হিসাবেই ট্রামকে রাখতে চান। দুর্ঘটনা এবং যানজট এড়াতে শহরের বাকি দুই রুট থেকেও ট্রাম তুলে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত হয়েছে তাদের। তবে পুরোটাই আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করছে।