সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিনেমাতে এরকম বহুবার দেখা গিয়েছে। সৎ হওয়ায় উচ্চপদস্থ আমলাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন কোনও কম গুরুত্বপূর্ণ পদে, যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সুযোগ কম। কিন্তু বাস্তবেও যে ছবিটা এমনই, সে কথাই ফের একবার প্রমাণিত হয়ে গেল আইএএস অফিসার অশোক খেমকার ৫১তম বদলির খবরে।
সরকার পালটালেও পালটায় না মনোভাব। কংগ্রেসের আমলে নানা ভুয়ো অভিযোগে নাস্তানাবুদ হওয়া, জনমানসে ‘সৎ’ বলে পরিচিত আমলা অশোক খেমকার বদলির নির্দেশ দিল হরিয়ানার বিজেপি সরকার। ৫২ বছরের আমলা তাঁর কর্মজীবনে এই নিয়ে ৫১ বার বদলি হলেন। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর তাঁকে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের মুখ্যসচিব করে পাঠাচ্ছে। বিদায়বেলায় টুইটারে এক আবেগঘন পোস্ট করেছেন খেমকা। লিখেছেন, ‘অনেক কাজের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন। স্বার্থান্বেষীরাই জিতে গেল। আবার একটা বদলির খবর এল। কিন্তু এমনটা আগেও আমার সঙ্গে হয়েছে। নতুন উদ্যমে আবার কাজ শুরু করব…করবই।’
[হাফিজকে নিকেশ করতে পারে ‘র’, পাকিস্তানের আতঙ্কে উৎফুল্ল খুরশিদ]
২০১২-র ডিএলএফ জমি কেলেঙ্কারিতে সোনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট ওয়াধেরার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে প্রভাবশালীদেরর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন এই আমলা। হরিয়ানার তৎকালীন ভূপিন্দর সিং হুডার কংগ্রেস সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ওই জমির চুক্তি বেআইনিভাবে বাতিল করার অভিযোগ তুলে চার্জশিট দায়ের করে। ২০১৪-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায় এসে ওই চার্জশিট বাতিল করে। ২০১৬-তে তাঁকে মুখ্যসচিব করে আনা হয়। কিন্তু এবার সেই বিজেপি সরকারই তাঁকে ফের বদলি করল। খট্টর প্রশাসনের সাম্প্রতিকতম রদবদলে যে ১৩ জন আমলা বদলি হয়েছেন, তাঁদের তালিকায় নাম রয়েছে খেমকার।
অন্যায়ের সঙ্গে কোনও আপস করেননি। তারই কি ‘পুরস্কার’ বারবার বদলি? ক্ষোভ চেপে রাখেননি খেমকা। টুইটারেই সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বহু মানুষের সমর্থনও পেয়েছেন। নারী ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায়বিচার দপ্তরের মুখ্যসচিবের পদ থেকে বদলি হয়ে যাচ্ছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অনিল ভিজের অধীনে। কিন্তু কেন এই বদলি? প্রশাসনের অন্দরে কান পাতলে উঠে আসছে নানা তত্ত্ব। সরকারি টাকায় মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মীদের জন্য দিওয়ালিতে বোনাসের বিরোধিতা করে খট্টরের রোষানলে পড়েন তিনি। যে দপ্তরে কর্মরত ছিলেন, সেই দপ্তরেরই মন্ত্রী কৃষণ কুমার বেদীর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর সরকারি গাড়ির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হন। সম্প্রতি খেমকার ‘সততা’র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে নাকি চিঠিও দেন বেদী। দুই দশকেরই বেশি সময় ধরে কর্মরত এই আমলাকে অবিলম্বে অন্য দপ্তরে সরানোর নির্দেশ দেন।
সততার জন্য লাগাতার বদলি হতে থাকা আমলাদের তালিকায় অশোক খেমকা একা নন অবশ্য। তিনি বরং দ্বিতীয়। তালিকায় সবার উপরে নাম রয়েছে প্রদীপ কাসনির। কর্মজীবনে তাঁকে ৬৮ বার বদলি হতে হয়েছে।
[রাষ্ট্রপতির কন্যা হওয়ায় আর কেবিন ক্রিউ থাকলেন না স্বাতী]
The post সততার দায়ে ফের বদলি আইপিএস অশোক খেমকা, এই নিয়ে ৫১ বার appeared first on Sangbad Pratidin.