সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) বিধায়কের গাড়ি নিয়েই জঙ্গিরা তীর্থযাত্রীদের উপর আক্রমণ করে। সোমবারই এই দাবি করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। যদিও অভিযুক্ত বিধায়ক আয়াজ আহমেদ মির তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে এই হামলার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কোনওভাবেই জঙ্গিদের যোগ নেই বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তদন্তে সবরকমভাবে সাহায্য করবেন। সঠিক তদন্ত হলেই সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ঘটনার সময় তিনি জম্মুতে ছিলেন বলেও জানিয়েছেন মির। গত বছরের নভেম্বরে পিডিপি অভিযোগ করে যে, তাদের বিধায়ক আয়াজ মিরকে বিজেপিতে নাম লেখানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
[কোচই বাধ্য করেছিল মাথা ন্যাড়া করতে, মুখ খুলল জুনিয়র হকি খেলোয়াড়রা]
জঙ্গি হামলার সঙ্গে ওই বিধায়কের প্রত্যক্ষ যোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও এনআইএ ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশকে জানিয়েছেন। আয়াজ আহমেদ মির নামে ওই বিধায়কের জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গিদের সঙ্গেও প্রত্যক্ষভাবে পরিচয় থাকার প্রমাণ মিলেছে বলেও জানিয়েছেন এনআইএ-র অফিসাররা। অভিযুক্ত আয়াজ আহমেদ মির দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান কেন্দ্রের বিধায়ক। এনআইএ-র রিপোর্ট পাওয়ার পর জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, আয়াজ মিরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিন এনআইএ-র ডিএসপি রবিন্দর চিঠি দিয়ে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশকে জানিয়েছেন যে, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যোগ ছিল কাশ্মীরের বিধায়ক আয়াজ আহমেদ মিরের। তীর্থযাত্রীদের উপর হামলায় ওই বিধায়কের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে হামলা চালানো হয়েছিল অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের উপর। শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কে তীর্থযাত্রীদের একটি বাস আটকে বাইরে থেকে গুলিবর্ষণ করেছিল জঙ্গিরা। ওই হামলায় আট জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। নিহত তীর্থযাত্রীদের অধিকাংশই গুজরাতের বাসিন্দা। হামলার পরই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি জানিয়েছিলেন যে, এই হামলার পিছনে যারা রয়েছে, তাদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না। এই ঘটনার পিছনে অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তখন উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। ঘটনার প্রায় দেড় বছরের মাথায় ওই জঙ্গি হামলার পিছনে মুফতির দলের এক বিধায়কের যুক্ত থাকার কথা জানা গেল।
অমরনাথ হামলার পরই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ওই বিধায়কের গাড়ির চালক তৌসিফ আহমেদকে। তাকে গাড়ির চালক হিসেবে নিয়োগ করেছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের নিরাপত্তা বিষয়ক দফতর। এনআইএ-র অফিসাররা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই ওই বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষী আদিল বশিরের গতিবিধি নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দেয়। আদিল বশিরকেও নিয়োগ করেছিল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশই। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে সাতটি রাইফেল এবং একটি পিস্তল নিয়ে চম্পট দেয় বশির। কিছুদিন পরই সে জঙ্গিদের খাতায় নাম লেখায়। এখনও ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিদের তালিকায় আছে বশিরের নাম। প্রসঙ্গত, বশিরের নাম জঙ্গি তালিকায় থাকার পর থেকেই মিরের উপর সন্দেহ জাগে তদন্তকারী দলের। সেই মতো খোঁজ শুরু হয়। আর এবার এনআইএ দাবি করেছে, জঙ্গিদের সঙ্গে মিরের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
[“ইভিএম হ্যাক করা সম্ভব, ২০১৪’র ভোটেও হয়েছিল”, চাঞ্চল্যকর দাবি হ্যাকারের]
The post অমরনাথ হামলায় জড়িত কাশ্মীরি বিধায়ক, বিস্ফোরক দাবি এনআইএ-র appeared first on Sangbad Pratidin.