সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে বিধানসভা ভোটের আগে প্রচারের জন্য দিল্লির বিজেপি নেতাদের আনাগোনা চলছেই। রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে বিজেপির মেগা যোগদানে মেলায় সশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তবে দিল্লি থেকে ভারচুয়ালি সভায় ভাষণ রাখলেন তিনি। প্রথমেই সফর বাতিলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন। এরপর শনিবার ও রবিবার যোগদানকারী একাধিক ব্যক্তিকে দলে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেন অমিত শাহ। তৃণমূল সরকারকে ‘স্বৈরাচারী’, ‘তোলাবাজ’ বলে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ”মানুষের সঙ্গে আপনি অন্যায় করেছেন, কৃষকদের সঙ্গে, দরিদ্র মানুষকে ঠকিয়েছেন। মানুষ আপনাকে ক্ষমা করবে না। ভোটের সময় যত এগোবে, দেখবেন, আপনি ক্রমশ একা হয়ে যাচ্ছেন।”
রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা এ রাজ্যে চালু করতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), বিজেপির এই অভিযোগ বহুদিনের। এখন বিধানসভা ভোটের মুখে সেই অস্ত্রেই আরও শান দিচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। আর তার মাধ্যমেই তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দল সরকারে না থাকা কতটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। একুশে বিজেপি যদি বাংলার ক্ষমতায় আসে, তাহলে এসব সমস্যা আর থাকবে না বলে বারবার তাঁরা বার্তা দিচ্ছেন প্রত্যক্ষে, পরোক্ষেও। রবিবার অমিত শাহর ভাষণও তার চেয়ে পৃথক কিছু নয়। ‘কিষাণ সম্মান নিধি’, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ – এই দুই কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়েই কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত। ফের তা উল্লেখ করে এদিন অমিত শাহর আশ্বাস, বিজেপি বাংলার ক্ষমতায় এলে প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকেই ‘আয়ুষ্মান ভারত’ চালুর অনুমোদন দেবে। এতদিনকার বঞ্চনা থেকে মুক্ত হবেন বাংলার মানুষ, গড়ে উঠবে ‘সোনার বাংলা।’
[আরও পড়ুন: ট্যাবের পরে এবার ফুটবল, ভোটের আগে পড়ুয়াদের জন্য নয়া ভাবনা রাজ্য সরকারের]
রবিবার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে বিজেপির জনসভায় উপস্থিত হলেন আরেক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। মূলত তাঁর উপস্থিতিতে এদিন তৃণমূল ছাড়াও বিভিন্ন দল থেকে আরও বেশ কয়েকজন নেতা গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে দলবদল করেন। তাঁদের সকলকে স্বাগত জানিয়ে স্মৃতি ইরানি নিজের বক্তব্যে আগাগোড়া আক্রমণ জারি রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। বারবার ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করে কাটমানি থেকে রেশ দুর্নীতি, করোনা থেকে আমফানে রাজ্য সরকারের ভূমিকাকে নেতিবাচক বলে একাধিক অভিযোগ তুলে ধরলেন। সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী সুর, এবার বাংলা থেকে তৃণমূল যাবে, বিজেপি আসবে।
[আরও পড়ুন: ‘চলুন পালটাই’, ডুমুরজলা থেকে রাজ্যে ‘আসল পরিবর্তনে’র ডাক দিলেন রাজীব]
স্মৃতি ইরানির কথায়, ”প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে রাজ্যের মানুষ যে কতটা আগ্রহী, তা বোঝা যায় রাজীবদা, প্রবীরদা, রথীনদা, বৈশালীজির যোগদানেই। তাঁরা সকলে মোদিজির সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন।” এরপর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ”রাজ্যে ১৩৮ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। দিদি আপনি জেনে রাখুন, এঁদের প্রাণ বিফলে যাবে না। রক্ত দিয়ে এঁরা বিজেপির সংগঠনকে আরও মজবুত করেছেন। এঁদের সকলের রক্তের বিনিময়ে গড়ে উঠবে ‘সোনার বাংলা’।”