ইকুইটি লিঙ্কড সেভিং স্কিম তথা ইএলএসএস সম্পর্কে জানেন না, এমন লগ্নিকারী খুঁজে পাওয়া ভার। তবে এটি যে করছাড়ের বাজারেও সেরা স্কিম হতে পারে, তা কি জানতেন? এক গুচ্ছ ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য এই স্কিমকে আদর্শ করে তুলেছে। বিশ্লেষণে নিখিল কুমার মান্না
উৎসবের মরসুম তো শেষ হয়ে গেল। পুজোর গন্ধ কাটতেই মধ্যবিত্ত আয় শ্রেণিভুক্ত মানুষের আয়কর রিটার্ন নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক মহাশয়দের আবার ডিসেম্বরেই হিসেব জমা দিতে হয়।
এমতাবস্থায় ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের সেকশন 80C-তে ছাড়যোগ্য স্কিম যেমন NSC, PPF, EPF, ULIP, LIC, ELSS ইত্যাদি। এগুলির মধ্যে ELSS বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একাধিক কারণে। ELSS হল ইকুইটি লিঙ্কড সেভিং স্কিম।
# ELSS হল একাধারে টাক্স সেভিং স্কিম, অপরদিকে পোর্টফোলিওর উপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কাটাতে সাহায্য করে। এটি হল প্রকৃত সম্পদ সৃষ্টিকারী স্কিম।
# রিটার্নের নিরিখে যেখানে অন্যান্য 80C স্কিম যেমন NSC, PPF, EPF ৭%-৮% এর মধ্যে থাকে সেখানে ELSS স্কিম ১০%-১২% দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
# লক পিরিয়ড – ELSS স্কিম সব থেকে কম মাত্র ৩ বছরের লক পিরিয়ড আছে, বাকিদের ৫ বছর বা তার বেশি।
# ELSS স্কিম দু’ধরনের বিকল্পের সন্ধান দেয়। ডিভিডেন্ড অপশন এবং গ্রোথ অপশন। ডিভিডেন্ড অপশন-এ ডিভিডেন্ড পে আউট অথবা ডিভিডেন্ড রি-ইনভেস্টমেন্ট-এই দুই পদ্ধতি আছে। ‘গ্রোথ অপশন’-এ লক পিরিয়ড শেষ হলে পুরো টাকা তুলে নিতে পারবেন।
# Tax ছাড়-জমা টাকা 80C-তে সর্বাধিক ১,৫০,০০০/- ছাড় পাওয়া যায়।
এবার টাকা তোলার সময়-
# LTCG ১,০০,০০০/- পর্যন্ত পুরো ছাড়
# LTCG ১,০০,০০০/- এর উপরে যা হবে তার ১০% ট্যাক্স দিতে লাগবে।
[আরও পড়ুন: বিনিয়োগে কতটা ঝুঁকি নেবেন? রইল মাল্টি অ্যাসেট অ্যালোকেশন ফান্ডের ফান্ডা]
এখানেও NSC বা ৫ বছরের ব্যাঙ্ক ডিপোজিটের থেকে অনেক কম লাগবে ELSS স্কিমে।
NSC, ব্যাঙ্ক ডিপোজিট-এই সব মিলিয়ে ১০,০০০ টাকা বাদ দিয়ে পুরো উদ্বৃত গ্রস ইনকামে যোগ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে প্রত্যেকের ট্যাক্স স্ল্যাব বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। ২০%-৩০% কর দিতে হয় NSC বা ব্যাঙ্ক ডিপোজিটের ক্ষেত্রে।
# ELSS স্কিম পরিচালনার জন্য প্রত্যেক মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানি দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার নিয়োগ করেন এবং রিটার্ন যেহেতু মার্কেটের উপর নির্ভরশীল তাই একে 80c-তে করছাড়-সহ লগ্নির ইনস্ট্রুমেন্ট হিসেবে নেওয়া যেতেই পারে।
# ELSS-এ টাকা লগ্নির পদ্ধতি-প্যান, আধার/ভোটার কার্ড, এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল অ্যাড্রেস দিয়ে KYC করতে হবে। তারপর চেক বা অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম গিয়ে Lumpsum কিংবা SIP পদ্ধতিতে লগ্নি করতে পারেন।
তবে সেক্ষেত্রে একজন দক্ষ ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার, মিউচুয়াল ফান্ড ডিস্ট্রিবিউটর, সাব ব্রোকারের সাহায্য নিতে ভুলবেন না।
(লেখক কর্ণধার, মান্না ক্যাপিটাল)