সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপনি কি একজন চাকুরিজীবী? আপনার কি প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট রয়েছে? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে একটি খুশির খবর। কর্মীদের সুবিধার জন্য এবার নয়া উদ্যোগ নিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা EPFO।
কী সেই উদ্যোগ?
সাধারণত একটি চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চাকরিতে যোগ দিলে পিএফের টাকা ট্রান্সফার করাটা কখনও কখনও ঝক্কির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। একটি পিএফ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে আর একটি পিএফ অ্যাকাউন্ট খোলা বা একটির টাকা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা কমাতে এবার উদ্যোগী হল ইপিএফও। এবার থেকে একটি চাকরি ছেড়ে অন্য কোনও নয়া চাকরিতে যোগ দিলে আপনার পিএফ অ্যাকাউন্টের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ট্রান্সফার হয়ে যাবে। মুখ্য প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনার ভি পি জয় এই কথা জানিয়েছেন। পিএফ-কে আরও বেশি কর্মী-বান্ধব করে তুলতেই এই অভিনব উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে কোনও ব্যক্তি পুরনো চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চাকরিতে যোগ দিলেও তাঁর পিএফ অ্যাকাউন্টের টাকা ট্রান্সফার করতে আর নতুন করে কোনও উদ্যোগ নিতে হবে না। কেন্দ্রীয়ভাবেই বেতন থেকে কেটে নেওয়া টাকা পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে যাবে। চাকরি পালটানোর তিনদিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টাকা চলে যাবে অ্যাকাউন্টে। এর জন্য কোথাও কোনও আবেদন করতে হবে না। তবে এর জন্য পিএফ অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর যুক্ত থাকতেই হবে।
[এবার বাড়ি কিনতে পিএফ ফান্ড থেকে তুলতে পারবেন ৯০% টাকা]
ইপিএফও কর্তারা জানাচ্ছেন, যাঁরা পুরনো চাকরি ছেড়ে নয়া চাকরিতে যোগ দেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই পুরনো পিএফ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন। যদিও চাকরি পালটেও কেন্দ্রীয়ভাবে একটিই পিএফ অ্যাকাউন্ট চালানো যায়। কিন্তু সেই প্রবণতা ভারতে সামান্য কম। ইপিএফও-এর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, ওই সব ‘প্রি-ম্যাচিওর’ পিএফ অ্যাকাউন্টগুলির বন্ধ হওয়া আটকানো। প্রথাগত প্রবণতায় রাশ টানতেই কর্মীদের জন্য এই নয়া উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। কমিশনার জয় বলছেন, ‘যখনই কেউ চাকরি ছাড়েন, দেখা যায় তিনি তাঁর পুরনো অথচ চালু পিএফ অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিচ্ছেন। অথচ পরে ফের অ্যাকাউন্টটি চালু করতে চাইছেন বা নয়া অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইছেন।’ অনেকে ভাবেন, আগের সংস্থায় অল্প ক’দিন চাকরি করে কত টাকাই বা আর পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। এই ভেবে নতুন সংস্থায় যোগ দিয়ে নয়া অ্যাকাউন্ট খোলেন। এতে তাঁরই হকের টাকা নষ্ট হয়। ওই টাকা ‘ক্লেম’ করার ঝক্কি পোহাতে চান না অনেকেই। এবার সেই ঝঞ্ঝাট থেকে মিলবে মুক্তি।
কিন্তু এখন প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আধার নম্বর বাধ্যতামূলক হওয়ায় কোনও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্য ইপিএফও কমিশনার। তিনি বলছেন, ‘পিএফ একটি স্থায়ী অ্যাকাউন্ট। সামাজিক নিরাপত্তা পেতে যে কোনও কর্মী একটিই স্থায়ী অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, চাকরি পালটালেও কর্মীদের হকের টাকা ট্রান্সফারে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে সবসময় নজর থাকে কেন্দ্রের। তাই কারও পিএফ অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার নম্বর যোগ করা থাকলে ওই কর্মী দেশের যে প্রান্তেই যান না কেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তাঁর টাকা পিএফে জমা পড়তে থাকবে। দ্রুতই এই নয়া পরিষেবা চালু হতে চলেছে।
সম্প্রতি নিজেদের ব্যাপ্তি বাড়াতে আরও উদ্যোগী হয়েছে ইপিএফও। কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে। এই প্রচারাভিযানের মধ্যেই নতুন ১ কোটি কর্মী পিএফের আওতায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন জয়। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝে পিএফের টাকা তোলা উচিত। ছেলে বা মেয়ের বিয়ে, সন্তানের পড়াশোনা বা পরিবারের কেউ মারাত্মক অসুস্থ হলে তবেই পিএফের টাকা তুলুন, পরামর্শ ইপিএফও কর্তার।
[এবার পিএফের টাকায় মেটানো যাবে গৃহঋণের কিস্তি]
The post আপনার কি পিএফ অ্যাকাউন্ট রয়েছে? তাহলে জেনে নিন এই খুশির খবর appeared first on Sangbad Pratidin.