সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঁকুড়গাছিতে (Kankurgachi) স্ত্রী, শাশুড়িকে খুন করে জামাইয়ের আত্মহত্যার ঘটনার পরতে পরতে রহস্য। আর এই রহস্য উদঘাটনে পুলিশের ভরসা সুইসাইড নোট। সেই নোট ঘাঁটতে ঘাঁটতে নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ওই সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, সুপারি কিলার দিয়ে স্ত্রী এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনকে খুনের পরিকল্পনা করে অমিত। তবে সেই পরিকল্পনা বানচাল হওয়ায় নিজেই খুন করে স্ত্রী ও শাশুড়িকে।
পুলিশের দাবি, গত সোমবার বিকেলের উড়ানে বেঙ্গালুরু থেকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় ফেরে অমিত। আসার আগে এক বন্ধুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় তার। সন্তানকে বেলঘড়িয়ায় দাদার বাড়ি রেখে আসার দায়িত্ব ওই বন্ধুকে দেয় অমিত। সেই মতো বন্ধুও অমিতের সন্তানকে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে প্রি পেইড ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে ট্যাক্সিতে চড়ে অমিত। তারপর সোজা চলে যায় রামকৃষ্ণ সমাধি রোডে শ্বশুরবাড়িতে। পুলিশের দাবি, শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে একটি ল্যাপটপ ব্যাগে করে আগ্নেয়াস্ত্র নেয় সে। তবে কে অমিতকে আগ্নেয়াস্ত্রের জোগান দিল, সে বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তা জানতে অমিতের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: সময়ে গুরুত্ব দিলে করুণ পরিণতি হত না তমোনাশ ঘোষের, মানছেন চিকিৎসকরা]
এদিকে, সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী শিল্পীকে খুনের পরিকল্পনা বেশ কয়েকদিন আগেই করেছিল অমিত। সুপারি কিলার দিয়েই স্ত্রী এবং তার বাপের বাড়ির লোকজনকে খুন করতে চেয়েছিল সে। সুপারি কিলারের খোঁজে কখনও বিহার আবার কখনও তামিলনাড়ুও পাড়ি দিয়েছিল গুণধর। তবে মাঝে লকডাউনের জন্য তার খুনের পরিকল্পনা বাধা পায়। তাই ঠিক করেছিল নিজেই শিল্পীকে শেষ করে দেবে। সে কারণে ইদানীং ইন্টারনেট ঘেঁটে কীভাবে খুন করা যায়, সে সম্পর্কে পড়াশোনাও করছিল অমিত। তারপরই স্ত্রীকে খুন করে সে।
অমিত এবং শিল্পী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ছিল। বিয়ের আগে কমপক্ষে ১৭ বছর প্রেম করেছিল তারা। বৈবাহিক সম্পর্কের বয়স ১৪। বিয়ের ঠিক বছর চারেকের মাথায় সন্তানের জন্ম দেন শিল্পী। এতদিনের সম্পর্ক যার সঙ্গে তাকে খুন করল কেন অমিত, বারবার সেই প্রশ্নই মাথাচাড়া দিচ্ছে। শিল্পীর ভাইয়ের দাবি, সন্তান জন্মানোর পর কাজ ছেড়ে দিয়েছিলেন শিল্পী। সেই থেকেই অমিতের সঙ্গে অশান্তির সূত্রপাত। স্ত্রীকে হাত খরচের টাকাও দিত না অমিত। এমনকী ২০১৬ সালের দিওয়ালির পর আর কোনও শাড়ি এবং জুতো কিনে দেয়নি সে। মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার পর কফি খেলেও স্ত্রীকে সকলের সামনে অপমান করতে ছাড়ত না। অন্ততপক্ষে দু’বার বিদেশে চাকরির সুযোগ পায় মেধাবি অমিত। তবে ভারত ছেড়ে যেতে তাকে স্ত্রী শিল্পী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাধা দেয়। সে কারণে মনোমালিন্য থেকেই শিল্পীকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘পশ্চিমবঙ্গে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ বাড়ছে’, ভারচুয়াল সভামঞ্চ থেকে তোপ দিলীপের]
The post সুপারি কিলার দিয়ে স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা ছিল অমিতের! ফুলবাগান কাণ্ডে নয়া মোড় appeared first on Sangbad Pratidin.