শুভঙ্কর বসু: মাসের শেষেই ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন (By-Elections)। সেই উপনির্বাচন নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। নির্বাচন নিয়ে কমিশনকে লেখা মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর লেখা চিঠির বয়ান ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। ওই চিঠি নিয়েই হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন পেশায় আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বিজেপি ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবীই মামলাটি করেছেন।
কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যে উপনির্বাচন করানো হোক, এমন দাবি জানিয়ে নির্বাচনে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। তার পর কমিশনকে চিঠি দেন মুখ্যসচিবও। এর পরই মুর্শিবাদের দুই কেন্দ্রে নির্বাচন-সহ ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে কমিশন। কেন শুধুমাত্র ভবানীপুরে উপনির্বাচন হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতৃত্ব। তখনই আইনি পথে হাঁটার কথা ভেবেছিল তাঁরা।
[আরও পড়ুন: WB By-Election: ‘নির্বাচন এলেই তৃণমূল নেতাদের তলব করছে ED, CBI’, কর্মিসভা থেকে বিজেপিকে তুলোধোনা মমতার]
মুখ্যসচিবের চিঠির বয়ান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী। তাঁর কথায়, রাজ্যে একাদিক আসনে উপনির্বাচন প্রয়োজন। শুধুমাত্র ভবানীপুর নিয়ে কেন চিঠি দিলেন মুখ্যসচিব? কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা কি মুখ্যসচিব ঠিক করতে পারেন? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মুখ্যসচিব কি একটিমাত্র আসনের ভোট চেয়ে চিঠি দিতে পারেন, প্রশ্ন করেছেন মামলাকারী। যদিও ওয়াকিবহাল মহল বলছে, মুখ্যসচিব হলেন রাজ্যের আমলাদের মধ্যে প্রধান। সেই অধিকার বলেই এই চিঠি দিতে পারেন তিনি।
এদিকে উপনির্বাচন নিয়ে কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “নির্বাচন কমিশন একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। উপনির্বাচন সংক্রান্ত ওঁদের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকের এই সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি। তাই কেউ-কেউ আদালতে গিয়েছেন।” ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা সম্পূর্ণভাবেই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। তাই এক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে মামলা করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই মামলাটির শুনানি হতে পারে।
[আরও পড়ুন: WB By-Election: ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওঁকে জেতান’, ভবানীপুরে মমতার সভায় এসে আহ্বান অশীতিপর বাম নেতার]
উপনির্বাচন নিয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল কমিশন (Election Commission)। সেই মতো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের মতামত জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই ভোট নিয়ে রাজ্য প্রশাসন এবং রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন্দ্র ধরে ধরে করোনার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে কমিশনকে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাদা করে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, রাজ্য প্রশাসন পুজোর ছুটির আগেই উপনির্বাচনের পক্ষে। রাজ্যের প্রস্তাব এবং করোনা পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেই আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর (Bhabanipur) কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সময় মুর্শিদাবাদের যে দুটি কেন্দ্রে ভোট করানো যায়নি, সেই কেন্দ্রগুলিতেও ভোটগ্রহণ হবে ৩০ সেপ্টেম্বরই।