সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশুর চর্বি ও মাছের তেল দিয়ে বানানো ঘিতে তৈরি হয়েছে তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডু। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসছেন সনাতনীরা। চরম বিতর্কের মাঝেই তিরুপতির লাড্ডু ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীর দাবি, ধর্মীয় আস্থায় আঘাত হানার এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত করা হোক।
সম্প্রতি অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু দাবি করেন, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের শাসনকালে তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি ব্যবহার করা হত। ব্যবহার করা হত মাছের তেল। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার পর পরিবর্তন করে খাঁটি ঘি দিয়ে তৈরি হচ্ছে শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডু। এহেন অভিযোগের পরই শোরগোল পড়ে যায়। পরে ল্যাবরেটারিতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, সত্যিই তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে ব্যবহৃত হচ্ছে গরুর চর্বি, মাছের তেল। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন সনাতনীরা। অন্ধ্রের মন্ত্রী নারা লোকেশ জানান, তিরুপতি মন্দিরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাত করা হবে না। পরবর্তী সময়ে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য মন্দিরের পরিকাঠামোগত পরিবর্তন করা হবে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার মাঝেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন হিন্দু সেনার সভাপতি সুরজিৎ সিং যাদব। দায়ের মামলার তিনি জানান, শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে যে প্রসাদী লাড্ডু খাওয়ানো হয়েছে, তাতে ব্যবহৃত হয়েছে পশুর চর্বি মেশানো ঘি। এই ঘটনা হিন্দু ধর্মালম্বিদের সঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষের প্রতারনার সামিল। মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে, মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করা হয়েছে। যারা এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের খুঁজে বের করতে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত করা হোক। এবং মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অপরাধে তাদের যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।
চরম বিতর্কের মাঝে ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। চিঠিতে তিনি নালিশ করেছেন, অন্ধ্রপ্রদশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডু নিয়ে মিথ্যা ছড়াচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে ভক্তদের ভাবাবেগে আঘাত দিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। চিঠিতে লিখেছেন, ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের কোটি কোটি ভক্ত শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বে রয়েছে। তিরুপতির লাড্ডু নিয়ে অভিযোগ বিপজ্জনক হতে পারে। বড় ঝামেলা বাঁধতে পারে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অন্ধপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “ভক্তদের আস্থা ও বিশ্বাস পুনরুদ্ধারে সত্যটাকে আলোতে আনুন।” চিঠিতে লেখা হয়েছে, “এটা প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছড়ানো একটি মিথ্যা। এই মিথ্যা প্রচারে গোটা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগে আঘাত লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।"