সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবরির মতো ইস্যু আর চাই না। ঘৃণার বশে অন্যের ধর্মকে আক্রমণ কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ বা উদারপন্থী নেতা নন, এই কথাগুলি বলছেন সরসংঘপ্রধান মোহন ভাগবত। পুণেতে 'বিশ্বগুরু ভারত' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গিয়ে উঠতি হিন্দু নেতাদের ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ করা নিয়ে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন আরএসএসপ্রধান।
বাবরি ধ্বংস এবং রাম মন্দির নির্মাণ। পুরো 'আন্দোলনে' বিরাট ভূমিকা ছিল সংঘ পরিবারের। কিন্তু মোহন ভাগবত এবার বলছেন, রাম মন্দির-বাবরি মসজিদের মতো ইস্যু আর চাই না। সংঘপ্রধানের কথায়, "রাম মন্দির ছিল হিন্দুদের আস্থার বিষয়। হিন্দুরা চাইছিলেন মন্দির নির্মাণ হোক। রাম মন্দির নির্মাণটা তাই জরুরি ছিল। কিন্তু শুধু ঘৃণা আর শত্রুতার বশবর্তী হয়ে অন্য কোনও জায়গা নিয়ে এই ধরনের ইস্যু তৈরির চেষ্টা করলে সেটাকে সমর্থন করা যাবে না।"
আসলে রাম মন্দির নির্মাণের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক মুসলিম ধর্মস্থান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের শাহী জামা মসজিদ এমনকী রাজস্থানের আজমেঢ় শরিফেও হিন্দু ধর্মস্থান ছিল বলে দাবি করছেন স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী নেতারা। এভাবে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থান নিয়ে টানাটানি যে আরএসএসের বিশেষ পছন্দ নয় সেটা স্পষ্ট করে দিলেন শাহ। তিনি বলছেন, "কীভাবে সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে, সেটার উদাহরণ হিসাবে উঠে আসা উচিত ভারতের। আমাদের বিশ্ব শান্তি নিয়ে বড় বড় জ্ঞান শুনতে হয়। অথচ দেখুন প্রতিবেশী দেশগুলিতে সংখ্যালঘুদের কী অবস্থা।"
আরএসএস প্রধানের মুখে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা। খানিকটা চমকপ্রদ মনে হলেও মোহন ভাগবত বলছেন সংখ্যালঘু অধিকারের কথা। তাঁর কথায়, "উগ্রতা, ধর্মীয় আগ্রাসন, পেশিশক্তির প্রদর্শন, অন্য ধর্মের অপমান, এসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়।" আসলে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিতে যখন সংখ্যালঘু নিপীড়ন চরমে, তখন সংঘপ্রধানের এই সর্বধর্মসমন্বয়ের বার্তা খানিকটা কৌশলী অবস্থানও হতে পারে।