সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দি-চিনি ভাই-ভাই। এই বুলি আউড়েই ভারতের জমিতে থাবা বসিয়েছিল চিন, এমনটাই বলেন ইতিহাসবিদরা। খান-খান হয়ে গিয়েছিল দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ‘পঞ্চশীল’ নীতি। ‘ঘুণে ধরা’ বিদেশনীতির খেসারত প্রাণ দিয়ে দিতে হয়েছিল ভারতীয় জওয়ানদের। তারপর কেটে গিয়েছে কয়েক দশক। মহাশক্তি রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে ভারত। মোদি জামানায় আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলেও, বিদেশনীতির যেন আজও ধার নেই। সীমান্তে শক্তি না বাড়িয়ে নেহেরুর পথেই আলোচনার ফাঁদে পা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত আগস্ট মাসেই দিল্লিতে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ও চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেবেরাল ওয়েই ফেং। সীমান্তে সৈন্যসংখ্যা কমানো ও আলোচনার উপর জোর দিয়েছিলেন দু’জনেই। তবে সমস্ত সৌহার্দ্য ছিল টেবিলেই। ওই মাসেই একাধিকবার ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে চিনা সেনা।
[ফের হিন্দুত্বের তাস কংগ্রেসের, ক্ষমতায় এলে ‘রাম-পথ’ তৈরির প্রতিশ্রুতি]
প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, গত আগস্ট মাসে তিনবার ভারতীয় সীমানায় অনুপ্রবেশ করেছে লালফৌজ। উত্তরাখণ্ডের বারাহতি এলাকায় ভারতীয় জমির চার কিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করে চিনা সেনা। লাগাতার লালফৌজের উসকানিমূলক কাজে উদ্বিগ্ন দিল্লি। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, ডোকলামে সাময়িক ধাক্কা খেলেও থমকে নেই চিন। ভারতকে বেকায়দায় ফেলার সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি। চিনা রণনীতির একটি কায়দা হচ্ছে ‘বুলি দিয়ে গুলি’কে আড়াল করা। গত মাসে দিল্লিতে দুই দেশের সেনার মধ্যে ‘বর্ডার পার্সোনাল মিটিং’ বা বিএমপি-র উপর জোর দেয় চিন। বেজিংয়ের তরফে বলা হয় সম্পর্ক মজবুত করতে সীমান্তে দুপক্ষেরই উচিত সৈন্যসংখ্যা কমানো। মুখে শান্তির কথা বললেও তিব্বতে ভারি সামরিক অস্ত্র ও সেনার সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে লালফৌজ। উন্নতমানের রাস্তা ও বিমানঘাঁটি বানিয়েছে চিনা সেনা। অন্যদিকে অরুণাচল প্রদেশে ভারতের সামরিক পরিকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল। ৬২-সালের যুদ্ধ থেকেও শিক্ষা নেয়নি এদেশ।
কেন্দ্রে মোদি সরকার আসার পর বিদেশনীতি নিয়ে নয়া আশা দেখতে পেয়েছিলেন অনেকেই। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিদেশনীতি একপ্রকার বিফল বলেই মনে করা হচ্ছে। সদ্য চিনা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে নেপাল। তারপরই ভারতের সঙ্গে সামরিক মহড়া বাতিল করে দেয় কাঠমান্ডু। কয়েকদিন আগেই ভারতের বিমান ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানায় মালদ্বীপ। ভুটানেও বাড়ছে চিনা গতিবিধি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কূটনীতি মানেই ‘নরমে-গরমে’। এক্ষেত্রে সামরিক শক্তি প্রধান ভূমিকা নেয়। কিন্তু এই দেশে সেনার যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক পাল্লায় মাপা হয় বলেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে দেশ। শীঘ্রই নীতি নির্দিষ্ট না করলে ভবিষ্যতে বিশ্ব মানচিত্রে প্রাসঙ্গিকতা হারাবে ভারত।
[নিজাম হতে চেয়েছিল চোর! সোনার টিফিনবাক্সে খাবার খেয়ে পুলিশের জালে]
The post এক মাসে তিনবার! এবার ভারতের ৪ কিলোমিটার অন্দরে ঢুকল লালফৌজ appeared first on Sangbad Pratidin.