সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) তৈরি PM CARES ট্রাস্টে কোনও সরকারি নিয়ন্ত্রণ নেই। কেন্দ্র সরকার বা কোনও রাজ্য সরকার সরাসরি এই ট্রাস্টের তৈরি তহবিলের হিসেব-নিকেশ বা খরচের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে না। খোদ কেন্দ্রের দেওয়া নথিতেই উল্লেখ আছে এই তথ্যের।
এই PM CARES তহবিল নিয়ে শুরু থেকেই বহু প্রশ্ন ছিল বিরোধীদের। এই তহবিলের জমা খরচের হিসেব বা অডিট নিয়েও বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এসবের মধ্যেই সম্প্রতি এই তহবিল সম্পর্কিত ১৬ পাতার একটি দস্তাবেজ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। PM CARES- ট্রাস্টটি দিল্লির রাজস্ব বিভাগে নথিভুক্ত। যার একটি অংশে এই তহবিলকে সরকারি ট্রাস্ট হিসেবে উল্লেখ করা হলেও আরেকটি অংশ স্পষ্ট লেখা আছে, কোনও সরকারের এই ট্রাস্টের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। PM CARES-এর নথির ৫.৩ নং ক্লজে বলা হয়েছে, “এই ট্রাস্টের মালিকানা, বা কার্যপদ্ধতি বা এর খরচ কোনওটাই কোনও সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনওভাবেই এর উপর কোনও কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।” মজার কথা হল, এই ক্লজটির সুবাদেই PM CARES আরটিআই (RTI) আইনের আওতায় পড়ছে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত সংস্থা হওয়ার দরুন এই তহবিল সম্পর্কে আরটিআইয়ের জবাব দিতেও বাধ্য নয় সরকার।
[আরও পড়ুন: কৃষি আইন নিয়ে সমস্যা মেটাতে কমিটি গড়তে পারে সুপ্রিম কোর্ট, অবস্থানে অনড় কৃষকরা]
মজার কথা হল, সরকারি সংস্থা না হওয়া সত্ত্বেও PM CARES-এর চেয়ারম্যান পদে আসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও, সেটা ব্যক্তি হিসেবে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নন। একইভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই তহবিলের ট্রাস্টি। এবং, এই তহবিলের যাবতীয় আয়ব্যয়ের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র এই কয়েকজনের হাতেই ন্যস্ত। পরোক্ষে বলতে গেলে এই PM CARES ট্রাস্ট, এই কয়েকজনের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণাধীন।
উল্লেখ্য, মার্চ মাসে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি Prime Minister’s Citizen Assistance and Relief in Emergency Situations বা PM CARES নামের তহবিলটি তৈরি করেন। ২৯ মার্চ দিল্লির রাজস্ব বিভাগে এটি নথিভুক্ত হয়। তারপর থেকে বহুবার তিনি নিজে, সরকারের নেতামন্ত্রীরা, এমনকী সেলিব্রিটিরাও এই তহবিলে অনুদানের জন্য দেশবাসীকে আহ্বান করেছেন। বস্তুত, দেশের সব বড় শিল্পপতি থেকে শুরু করে, সেলিব্রিটিরা প্রত্যেকেই এই তহবিলে অর্থ দান করেছেন।