সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোনও কটু কথা নয়। সরাসরি আক্রমণাত্মক মেজাজ নয়। তবুও সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ে বাংলা-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে কাঠগড়ায় তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ঘুরিয়ে বলে দিলেন নভেম্বর মাসে যখন কেন্দ্র পেট্রল-ডিজেলের এক্সাইজ ডিউটি কমিয়েছিল সেসময় যেসব রাজ্য ভ্যাট কমায়নি, তাঁরা নিজেদের নাগরিকদের সঙ্গে অন্যায় করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, ৬ মাস আগে যেসব রাজ্য পারেনি, সেইসব রাজ্য যেন এখন পেট্রল-ডিজেলের ভ্যাট কমায়।
করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন। যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, “করোনার এই বিশ্বজনীন সংকট মোকাবিলায়, কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয় আগের থেকে অনেক বেশি করে প্রয়োজন। আজকের কঠিন পরিস্থিতিতে আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কোঅপারেটিভ ফেডারেলিজমের ভাবনা বজায় রাখতে হবে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে পেট্রল-ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্র সরকার এক্সাইজ ডিউটি কমিয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যগুলির সরকারকেও আমরা অনুরোধ করেছিলাম তারাও যেন কর কমায়। কিছু কিছু রাজ্য ভারত সরকারের সেই ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে কিছু কিছু রাজ্য নিজেদের নাগরিকদের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি। এটা শুধু ওই রাজ্যগুলির নাগরিকদের সঙ্গে অন্যায় নয়, পাশের রাজ্যগুলির মানুষের সঙ্গেও অন্যায়।”
[আরও পড়ুন: ‘ঘৃণার রাজনীতি বন্ধ হোক’, মোদিকে খোলা চিঠিতে আরজি ১০৮ প্রাক্তন আমলার]
এরপরই মোদি বাংলা (West Bengal), মহারাষ্ট্র, কেরল, তেলেঙ্গানার মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেন, “আমি নভেম্বরে বলেছিলাম, সব রাজ্য আমার কথা মানেনি। আমি কারও সমালোচনা করছি না। যে কোনও কারণেই হোক তখন আপনারা করতে পারেননি। যে রাজস্ব এই ৬ মাসে আপনারা তুলেছেন ভ্যাট বাবদ, সেটা আপনাদের রাজ্যেরই কাজে লাগবে। শুধু অনুরোধ করছি, আপনারা ৬ মাস আগে যেটা করতে পারেননি, সেটা এখন করুন। আপনাদের নিজের রাজ্যবাসীর স্বার্থে করুন।”
[আরও পড়ুন: ‘পেট্রোপণ্যে ভ্যাট না কমানো রাজ্যবাসীর সঙ্গে অন্যায়’, বাংলা-সহ বিরোধী রাজ্যগুলিকে তোপ প্রধানমন্ত্রীর]
যদিও প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সরকারি অনুষ্ঠানের নামে বিরোধী দলগুলির শাসনে থাকা রাজ্য সরকারগুলিকে কাঠগড়ায় তোলার কাজে ব্যবহার করলেন, তার তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, “এটা কী ধরনের মিটিং? মিটিংয়ের নামে নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্র সরকার কেন ট্যাক্স কমাচ্ছে না। পেট্রল-ডিজেলের মূল দামটা বাড়ছে কেন? বাংলার সরকারকে জ্ঞান দিতে হবে না, কীভাবে মানুষের সেবা করতে হবে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র সরকার ঢালাও সাহায্য করছে, ওদের কেন্দ্রের কাছে কোনও টাকা বকেয়া নেই। সেখানে বাংলা-সহ কিছু বিরোধী শাসিত রাজ্যকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের সব বকেয়া টাকা মিটিয়ে তারপর আমরা দেখব কীভাবে মানুষের সেবা করতে হয়।”