shono
Advertisement

Breaking News

ভারতীয় মেধা থাকুক দেশেই, ‘ব্রেন ড্রেন’আটকাতে নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ মোদির

নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর করায় জোর দিয়েছেন নতুন শিক্ষামন্ত্রী।
Posted: 02:08 PM Jul 10, 2021Updated: 02:30 PM Jul 10, 2021

সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দেশের মেধা যেন দেশেই থাকে। নতুন শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে এই ‘গুরুমন্ত্র’-ই দিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সুন্দর পিচাই থেকে শান্তনু নারায়ণ। সত্য নাদেলা থেকে রাজীব সুরি। অথবা ফ্রান্সিসকো ডি’সুজা। গুগল, অ্যাডোব, মাইক্রোসফট, নোকিয়া, কগনিজেন্ট-সহ বিশ্বের প্রথম সারির আরও বেশ কিছু তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির মাথায় এখন ভারতীয়রা। সুন্দরবনের কুলপি হোক বা কাশ্মীরের কুলগাম। ডুয়ার্সের লেপচাখা হোক বা কর্নাটকের লিঙ্গসুগুর। দেশের প্রান্তিক গ্রামগুলির পড়ুয়ারা যে শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থায় পড়াশোনা করে, বিশ্বের তাবড় তাবড় কোম্পানিতে ছড়ি ঘোরানো ভারতীয়রাও তাই। তাহলে কেন এই কুঁড়িগুলি দেশে বিকশিত হয়ে বিদেশে সৌরভ ছড়াবে?

Advertisement

শিক্ষামন্ত্রক সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi) বলেছেন, প্রথম শিল্পবিপ্লবে ভারতের কোনও অংশদারিত্ব ছিল না। দ্বিতীয়তে ব্রিটিশরা সুলভ শ্রমিক হিসাবে ভারতীয়দের শুধু গায়ে-গতরে খাটিয়ে নিয়েছে। তৃতীয় অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে বিপ্লব এসেছে, তাতে ভারতের ভূমিকা অনেক। তবে তাতে দেশ লাভবান হয়নি। কারণ ব্রেন ড্রেনের মাধ্যমে ভারতীয় মেধার লাভ উঠিয়েছে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলি। তাই ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে যদি কোনও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হয়, কোনওভাবেই এই সুযোগ হাতছাড়া যাতে না হয়, সেদিকে কড়া নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এমনকী সেই বিপ্লবে ভারতই যেন বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়, সেই ব্যবস্থা করার কথাও নাকি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গুরুত্বপূর্ণ এই কাজের দিশা তৈরি করার গুরু দায়িত্ব দিয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধানের নেতৃত্বে শিক্ষামন্ত্রককে। যেখানে স্থান পেয়েছেন বাংলার ডা. সুভাষ সরকার, মণিপুরের ডা. রাজকুমার রঞ্জন সিং ও ঝাড়খণ্ডের অন্নপূর্ণা দেবী।

[আরও পড়ুন: দুইয়ের বেশি সন্তান থাকলে মিলবে না সরকারি চাকরি, নতুন বিল আনার প্রস্তুতি যোগী সরকারের]

সুভাষ সরকার একজন বিশিষ্ট ডাক্তার। মণিপুরের সাংসদ রাজকুমার রঞ্জন সিং দীর্ঘদিন শিক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। চল্লিশ বছর ভুগোলের অধ্যাপক, ডক্টরেট। অবসর নেন মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর অব কলেজ ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল পদে থেকে। অন্নপূর্ণা দেবী বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সামলে এবার পেয়েছেন এই গুরুদায়িত্ব। মন্ত্রকের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এদিন বিভিন্ন আমলা, কর্মী ও মিডিয়াকর্মীদের সঙ্গে পরিচিত হন ধর্মেন্দ্র প্রধানরা। আইআইটি বম্বে, কানপুর, মাদ্রাজ, আইআইএসসি ব্যাঙ্গালোরের মতো দেশের প্রথম সারির ১০৬টি প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও হয় বৈঠক। এই প্রতিষ্ঠানগুলি করোনা আবহে দেশকে কিছু না কিছু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদও জানানো হয়। এছাড়া গত বছর চালু হওয়া জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন মন্ত্রী-আমলারা।

দেশে বর্তমানে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি। কীভাবে নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে তাঁদের শিক্ষিত করা যায়, এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁদের বিদেশে যাওয়া আটকে রেখে তাঁদের মেধাকে দেশেই কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই প্রক্রিয়াও শুরু করে দেওয়া হয় প্রথম দিন থেকেই। এমনটাই শোনা গিয়েছে শিক্ষামন্ত্রক চত্ত্বরে।

[আরও পড়ুন: দশটা-পাঁচটা নয়, নতুন রেলমন্ত্রীর নির্দেশে এবার রাত ১২টা পর্যন্ত ডিউটি রেলের অফিসারদের]

এদিনের আলোচনায় উঠে আসে ডিজিটাল শিক্ষা প্রসঙ্গও। অতিমারী আবহে শারীরিক দূরত্ব, ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর মতো অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত নতুন অভিজ্ঞতা, অনলাইন ক্লাস। অথচ দেশের এমন অনেক প্রান্তিক ও দরিদ্র পরিবার আছে, যাদের পড়ুয়ারা এখনও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। কীভাবে সেই সমস্যা মেটানো যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রান্তিক পড়ুয়াদের সমস্যা দু’বছরের মধ্যে মিটে যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী মন্ত্রক। কারণ ডিজিটাল ইন্ডিয়া-য় গোটা দেশকে যুক্ত করতে ইতিমধ্যেই বাজেট বরাদ্দ করেছে অর্থমন্ত্রক। কীভাবে দরিদ্রতম পরিবারের পড়ুয়াদের সমস্যা মেটানো যায়, সেটিও এখন নতুন চ্যালেঞ্জ মন্ত্রকের কাছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement