শেখর চন্দ্র, আসানসোল: রানিগঞ্জে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও এক। ধৃত শশীকান্ত মালি। অন্ডাল থানার দক্ষিণখণ্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই যুবককে। ডাকাতির ঘটনায় এই যুবক প্রত্যক্ষ নাকি পরোক্ষভাবে যুক্ত, তা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। এই নিয়ে মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে ডাকাতির ঘটনায় সুরোজ কুমার সিংকে গিরিডি জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করে ঝাড়খণ্ড ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ। তার পর গ্রেপ্তার হয় ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড সেই গুলিবিদ্ধ সোনু সিং। এবার পুলিশের জালে শশীকান্ত। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সোনু সিং ডাকাতির ঘটনার ১২ দিন আগে অন্ডাল থানা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে রেইকি করে। সেই সূত্র ধরেই তৃতীয়জনকে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রীকে হোটেলে ডেকে বিপাকে যুবক, কাটা গেল যৌনাঙ্গ!]
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন, রবিবার দুপুরে রানিগঞ্জের বিখ্যাত স্বর্ণবিপণির শোরুমে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মোট সাতজন দুষ্কৃতী ছিল। দুষ্কৃতীদল যখন লুটপাট চালাচ্ছিল তখন কাছাকাছি ব্যক্তিগত কাজে হার্ডওয়ারের দোকানে যান জামুরিয়া থানার শ্রীপুর ফাঁসির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। দোকান থেকে বেরিয়ে চোখ পড়ে তাঁর সোনার দোকানের শোরুমে। লক্ষ্য করেন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবক ভিতরে ঢুকছে আর বেরচ্ছে। দুঁদে অফিসারের নজর এড়ায়নি। সতর্ক হয়ে যান। নেন পজিশন। দোকানের বাইরে দুই দুষ্কৃতী বেরিয়ে আসতেই গুলি চালান মেঘনাদ। কোমরে গুলি লাগে এক দুষ্কৃতীর। পড়ে যায়। এর পর ৫ দুষ্কৃতী মিলে মেঘনাদকে লক্ষ্য করে লাগাতার গুলি চালাতে থাকে।
ল্যাম্পপোস্টের আড়াল থেকে একাই পালটা গুলির লড়াই চালাতে থাকেন ওই আইসি। ততক্ষণে দুটি মোটর বাইকে সাতজন দুষ্কৃতী পালাতে চেষ্টা করে। একদিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র থেকে দুষ্কৃতীদের এলোপাথাড়ি গুলি। হাতে দেখা যায় কার্বাইনও। পালটা মেঘনাদ মণ্ডলের সার্ভিস রিভলবারের টার্গেটে ডাকাতরা। তখনও রানিগঞ্জ থানার পুলিশের দেখা নেই। প্রাণের ভয় না করে, জমি না ছেড়ে শেষ পর্যন্ত ৭ দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে একাই লড়ে গিয়েছেন শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। তাঁরই গুলিতে আহত হয় এক দুষ্কৃতী। শেষ পর্যন্ত বাধার মুখে পড়ে, রক্তাক্ত হয়ে কোনওমতে দুটি বাইকে সাত দুষ্কৃতী এলাকা ছাড়ে। তখনও বাইকের পিছনে ধাওয়া করেন মেঘনাদ মণ্ডল। সেই জখম ডাকাতকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।