বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: পৈতৃক বাড়ি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে গন্ডগোল। আর তার জেরেই পরিকল্পনা করে সুপারি কিলার দিয়ে খুন করা হয়েছে প্রাক্তন পুলিশ কর্মীকে। নদিয়ার (Nadia) গয়েশপুরের প্রাক্তন পুলিশকর্মীর খুনের তদন্তে নেমে ‘সুপারি কিলিং’য়ের বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত পুলিশ। খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মৃতের ভাইপো-সহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কল্যাণী থানার পুলিশ। মৃতের ভাইপোও পুলিশ কর্মী।
শুক্রবার গভীররাতে দুজনকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার তাদের কল্যাণী মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুজনের নাম দেবাশিস কর্মকার ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য। দেবাশিসের বাড়ি গয়েশপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। সম্পর্কে সে মৃত জনার্দন কর্মকারের ভাইপো। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে কনস্টেবল পদে কর্মরত। শুক্রবার গভীর রাতে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে কল্যাণী থানার পুলিশ। ধৃত অভিজিতও গয়েশপুরের বাসিন্দা।
[আরও পড়ুন: শহরে ৯০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী! মেট্রো লাইনে গাছ ভেঙে ব্যাহত পরিষেবা, বন্ধ উড়ান]
জেলা পুলিশের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন,”মৃতের পৈতৃক বাড়ি নিয়ে পুরনো বিরোধের জেরেই পরিকল্পনা করে জনার্দন কর্মকারকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত। তবু খুনের আসল মোটিভ কী, ষড়যন্ত্রে আর কেউ জড়িত কি না, তা জানার জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” সুপারি কিলার দিয়ে খুন করানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, জনার্দন কর্মকারের তাঁর ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে পৈতৃক জমি-বাড়ি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। অথচ সেই বাড়ির কিছুটা অংশ জনার্দনের ভাইপো দেবাশিস গয়েশপুরের বাসিন্দা অভিজিতকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন জনার্দন। ২০২১ সালে তা নিয়ে আদালতে মামলাও করেছিলেন। ফলে জমি বিক্রি হয়ে গেলেও সেখানে নির্মাণকাজ করতে গিয়ে বাধা পায় অভিজিত। আলোচনা করে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর মোহন রাম। কয়েকদিন আগে ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের অফিসে তিন পক্ষকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিল। যদিও তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। ফলে ওই জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান কবে হবে, তা নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।
[আরও পড়ুন: আগামী মাসেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ফলপ্রকাশ, শিগগিরই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে সংসদ]
প্রসঙ্গত,শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ির সামনেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন প্রাক্তন পুলিশকর্মী জনার্দন কর্মকার।মৃতের পরিবার আগেই জানিয়েছিল, কিছুদিন আগে জনার্দন কর্মকারকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। আসলে তাঁকে সরিয়ে দিলে জমি সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমন ভাবনা থেকেই সুপারি কিলার দিয়ে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা।