জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বন্ধুর টাকা হাতাতেই খুন করে পলিথিনে জড়িয়ে বাক্সবন্দি করে রেখে দিয়েছিল দুই যুবক। তাও ২০ দিন আগে নয়, খুন করা হয়েছিল ছ’মাস আগে। বনগাঁর (Bongaon) গোবরাপুর এলাকা থেকে পচা-গলা দেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ। খুনের অভিযোগে অভিজিৎ সন্ন্যাসী নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। প্রণব বিশ্বাস নামে আরেক অভিযুক্তর সন্ধানও শুরু করেছেন আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সুদীপ মজুমদার। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জে। প্রায় ছমাস আগেই তাঁকে খুন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন সুদীপেরও কোন খোঁজখবর পাচ্ছিল না তার পরিবার। এমনকী তার খোঁজ খবর জানতে ফেসবুকে পোস্টও করা হয়েছিল। আর সেই পোস্ট দেখেই পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাঁরা এসে মৃত সুদীপ্তকে শনাক্ত করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সুদীপের টাকা হাতিয়ে তারপর তাঁকে খুন করেছে দুই অভিযুক্ত।
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের বিরোধিতা করলে উৎখাত করব’, ভোটের প্রচারে ‘হুমকি’ দিয়ে বিতর্কে গৌতম দেব]
এর আগে শনিবার গোবরাপুর এলাকার একটি ঘরের মধ্যে থেকে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির পচা-গলা দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া অভিজিৎকে আটক করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। জানা যায়, গোবরাপুর এলাকার কৃষ্ণ দাসের বাড়ির দোতালার পাশাপাশি দুটি ঘরে অভিযুক্ত অভিজিৎ সন্ন্যাসী ও প্রণব বিশ্বাস ভাড়া থাকতো। প্রায় ছমাস ধরে অভিযুক্ত প্রণবের ঘরটি বন্ধ ছিল। মাসখানিক আগে বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিল অভিজিৎও৷
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মৃত সুদীপ অভিযুক্তদের পূর্বপরিচিত বন্ধু। সুদীপ জমি কেনার জন্য টাকা নিয়ে মাস ছয়েক আগে অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা করতে গোবরাপুরে এসেছিলেন। পুলিশের দাবি ,অভিযুক্তরা তাঁকে জমি কিনে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে খুন করে৷ এরপর মৃতদেহ পলিথিনে মুড়ে কাঠের পাটাতনের মধ্যে রেখে দেয়। এরপর ঘরটিতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায় প্রণব। তারপর থেকে প্রণবের আর কোনো সন্ধান পাইনি বাড়ির মালিক কৃষ্ণ দাস। ঘরটি পরিষ্কার করার জন্য দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই পচা দুর্গন্ধ পান কৃষ্ণ দাসের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে কাঠের বাক্সের মধ্যে কালো প্লাস্টিকে মোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করে তদন্তের শুরু করেছিল।