গোবিন্দ রায়: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে খোদ অস্থায়ী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে ঢুকতে না দেওয়ায় মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই বিষয়ে গিরিশ পার্ক থানার ওসিকে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যাতে এখনই অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য এবং রেজিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেন। সেই বিষয়ে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের তরফে আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য এদিন সওয়াল করেছিলেন। তিনি বলেন, "এখনও বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।" বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, "কারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে?" রাজ্যের তরফে আইনজীবী বসু মল্লিক বলেন, "এরা সবাই স্টাফ। গতকালও পুলিশ ওখানে ছিল। আজও ছিল। ভিসি আসেননি ওখানে। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে।" বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের পালটা দাবি, "যদি ভিসিকে বলা হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বিক্ষোভ চলছে। তিনি কী করে যাবেন?"
বিচারপতি বলেন, "আমি বুঝতে পারছি না, জানার পরেও কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? এখনই গেট খুলে দেওয়া হোক। উপাচার্যকে আটকানো যাবে না। উপাচার্যকে এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া হোক।" রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ওখানে পুলিশ আছে। তখন বিচারপতি বলেন, "উপাচার্যকে এখনই ওখানে যেতে বলুন। প্রয়োজনে ওনাকে এসকর্ট করে নিয়ে যান। যদি ওনাকে কেউ আটকায় তাহলে এত আদালতে এসে জানান। এভাবে কী করে বিক্ষোভ দেখানো যায়? উপাচার্যকে আটকানো যাবে না।"
উপাচার্যের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন, "সিঁথি এবং গিরিশ পার্ক থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। সিঁথি এবং জোড়াসাঁকোর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।" তখন বিচারপতি জানতে চান, উপাচার্য কোন ক্যাম্পাসে এখন যাবেন? আদালতে জানানো হয়, জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে। তখন বিচারপতি জানান, তাহলে গিরিশ পার্ক থানায় জানানো হোক।
গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে। এদিন উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের ঘরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে নিয়োগ করেছিলেন। অভিযোগ, কিন্তু তিনি চেয়ারে বসার পর থেকেই নিজের মতো করে কাজ চালাচ্ছেন। কারও কথা শোনা হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা থেকে অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যাতে তৎক্ষণাৎ অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য এবং রেজিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারেন। গিরিশ পার্ক থানার ওসি এই বিষয়ে যাবতীয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। পুলিশ কী পদক্ষেপ করেছে, রাজ্য রিপোর্ট তৈরি করবে। আগামিকাল বুধবার জয় সেনগুপ্তের এজলাসে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।