দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সিঙ্গুরে (Singur) একই পরিবারের চারজনের খুনের ঘটনায় নয়া মোড়। সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে নিকট আত্মীয়ই তাঁদের খুন করেছেন বলেই সন্দেহ পুলিশের। প্যাটেল পরিবারের ওই নিকট আত্মীয়ের খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
সিঙ্গুরের নান্দায় দীনেশ প্যাটেলের নিজস্ব কাঠ চেরাইয়ের একটি করাত কল আছে। এই ব্যবসা ও পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। অভিযোগ, স্থানীয়রা দীনেশের মামাতো ভাই যোগেশ ধাওয়ানীকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে দীনেশ প্যাটেলের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। দেখেন ওই আত্মীয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। ঘরের ভিতরে বাবা, ছেলে, বউমা ও নাতি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সারা ঘর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। চার জনেরই শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র এবং ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা দীনেশ প্যাটেল ও তাঁর স্ত্রী অনসূয়াকে মৃত বলে জানান।
[আরও পড়ুন: স্বামীকে হাতের মুঠোয় রাখতে তুকতাক, খাবারে ঋতুস্রাবের রক্ত মেশাতেন স্ত্রী]
দীনেশবাবুর ছেলে ভাবিক প্যাটেল ও বাবা পাভজি প্যাটেলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁদের মৃত্যু হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই দীনেশের মামাতো ভাই যোগেশ ধাওয়ানী পলাতক। সূত্রের খবর, দীনেশ প্যাটেলের বাড়িতে রাতে যে পাহারাদার থাকতেন, তিনি এদিন সকালে যোগেশকে বাড়িতে আসতে দেখেছিলেন।পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তমাখা অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরোতে দেখেন বলে অভিযোগ। দীনেশের করাতকলে কাজ করত যোগেশ। সিঙ্গুরের হাকিমপুরে বিশ্বনাথ দাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে গত দু’বছর ধরে যোগেশ মাকে নিয়ে ভাড়া থাকত। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনার পর সেই বাড়িতে তালা দিয়ে সকলে অন্যত্র চলে যায়।
সিঙ্গুর থানার পুলিশ মৃতের পরিবারের পাহারাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তির কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। যার ভিত্তিতে খুনির সন্ধান শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দীনেশ প্যাটেলের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে খুনিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। হুগলি জেলা গ্রামীণ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবপ্রসাদ পাত্র জানান, “প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে ব্যবসা ও সম্পত্তিগত বিবাদের জন্যই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। খুব শীঘ্রই অপরাধীরা ধরা পড়বে।”