অর্ণব আইচ: শিবপুরের (Shibpur) ব্যবসায়ীর বাড়ি ও গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনার রহস্যভেদ করতে তৎপর পুলিশ। পাণ্ডে ব্রাদার্স অর্থাৎ অরবিন্দ, রোহিত ও শৈলেশ পাণ্ডের হদিশ পেতে মরিয়া তদন্তকারীরা। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে জারি হল লুকআউট নোটিস।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার হাওড়ার শিবপুরের একটি আবাসনে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। কিন্তু আবাসনের বাসিন্দা অভিযুক্ত ব্যবসায়ী তথা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডের ফ্ল্যাট ছিল তালাবন্ধ। নিরাপত্তারক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পারেন, শৈলেশ বা তার পরিবার ফ্ল্যাটে না থাকলেও তাঁদের গাড়ি রয়েছে আবাসনের পার্কিংয়ে। গোয়েন্দারা গাড়িটিকে পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন, ভিতরে রয়েছে একটি ব্যাগ। এতেই তাঁদের সন্দেহ হয়। গাড়ির দরজা খুলতেই বেরিয়ে আসে টাকা আর রত্নের ভাণ্ডার। পুলিশের দাবি, ওই গাড়ির সিট, ডিকি ও গোপন কুঠুরি থেকে উদ্ধার হয় ২ কোটি ২০ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে প্রচুর, সোনা, রুপো ও হীরের গয়না, যার দাম প্রায় কোটি টাকা। তাঁদের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের দু’টি অ্যাকাউন্টে মোট লেনদেন হয়েছে ৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ কোটি টাকা পুলিশ লেনদেন হওয়া থেকে রুখেছে বা ‘ব্লক’ করেছে। পুলিশের দাবি, ভুয়ো অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশ যোগে ‘ফরেক্স ট্রেডিং’-এর মাধ্যমেই অনলাইন জালিয়াতি এই বিপুল টাকা ও সম্পত্তির উৎস।
[আরও পড়ুন: গাড়ির পর বাড়িতেও গুপ্তধনের খোঁজ, হাওড়ায় ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বিপুল টাকা]
মূলত লগ্নি ও শেয়ারের ভুয়ো অ্যাপের মাধ্যমেই বিদেশের থেকে টাকা তুলে ভুয়ো সংস্থার নামে রাখা হত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এই জালিয়াতির পিছনে গার্ডেনরিচের আমির খানের মতো গেমিং অ্যাপ বা বিডন স্ট্রিটের শুভজিৎ শ্রীমানির মতো ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমেও টাকা তোলা হত কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। টাকা ও গয়না উদ্ধার করে ২০১৩ সালে কেনা ওই গাড়িটি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে। এর পরই চাবিওয়ালা ডেকে তালা ভেঙে আবাসনের তিনতলায় শৈলেশের ফ্ল্যাটে শুরু হয় তল্লাশি। মধ্য কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডের একটি বহুতল বাণিজ্যিক বাড়িতে শৈলেশের অফিস। হাওড়ায় তাঁর তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে শিবপুরের কাউঘাট রোডের বাড়িতে তল্লাশি চলে। মন্দিরতলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৬ কোটি টাকা। রবিবার বিকেলে ব্যাঙ্কশাল আদালতে শৈলেশকে গ্রেপ্তারির জন্য আবেদন জানায় লালবাজার। তাঁর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। তারপর জারি হল লুক আউট নোটিস।