শুভঙ্কর বসু: খুন বা রাজনৈতিক অশান্তিতে মৃত্যু নয়, দিনহাটার বিজেপি (BJP) নেতা আত্মহত্যাই করেছেন। সূত্রের খবর, ভোটের আগে শাসকদলকে কার্যত স্বস্তি দিয়ে রাজ্য কমিশনের তরফে নিযুক্ত পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এমনই রিপোর্ট দিলেন। অর্থাৎ পুলিশ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টে বিজেপি নেতাদের অভিযোগ কার্যত খারিজ হয়ে গেল। এখন এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন (Election Commission) বিষয়টি দেখবে।
গত বুধবার সকালে দিনহাটা (Dinhata) শহর মণ্ডলের বিজেপি সভাপতি অমিত সরকারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিজেপি কার্যালয়ের লাগোয়া পশু চিকিৎসালয়ের বারান্দায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান প্রাতঃভ্রমণকারীরা। তাঁকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দিনহাটায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে দেহ উদ্ধার করতে বাধা দেয় বিজেপি কর্মীরা। পরে অবশ্য দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। এদিকে, এই ঘটনায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন দলীয় কর্মীরা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক উদয়ন গুহর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। এই গুঞ্জনও শোনা যায়, তিনি এবার ভোটে প্রার্থী হতে না পেরে অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন।
[আরও পড়ুন: ভোটের দু’দিন আগে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম, শুভেন্দুর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের!]
ঘটনার জেরে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে নির্বাচন কমিশনও নড়েচড়ে বসে। এ রাজ্যে নিযুক্ত দুই পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে, অজয় নায়েককে। কমিশনের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তাঁরা কপ্টারে পৌঁছে গিয়েছিলেন এলাকায়। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অমিত সরকারের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কথা বলেন তাঁর দেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গে। সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সোমবার তাঁরা কমিশনকে রিপোর্ট পাঠান।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, দামোদরে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু ৪ জনের]
সূত্রের খবর, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, খুন নয়, রাজনৈতিক অশান্তিও নয়। অমিত সরকার আত্মহত্যাই করেছেন। তার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নাও থাকতে হবে। আর পুলিশ পর্যবেক্ষকের এই রিপোর্টে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে তৃণমূল (TMC)। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, দিল্লির কমিশনের নিযুক্ত অফিসারদের এই রিপোর্টই প্রমাণ করে, বাংলার ভোটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিরপেক্ষই। ফলে তৃণমূল যে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিল কমিশনের বিরুদ্ধে, তা খারিজ হয়ে গেল কার্যত।