অর্ণব আইচ: খারিজ অস্বাভাবিক মৃত্যুর তত্ত্ব। হৃদরোগই প্রাণ কেড়েছে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পীর কেকে’র, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মিলল তথ্য। সংগীত শিল্পীর স্ত্রীর দাবি, হজমের সমস্যায় ভুগতেন কেকে। সে কারণে প্রায় প্রতিদিনই ওষুধ খেতেন। চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ খাওয়ার ফলে বিপত্তি বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, হৃদরোগ মূলত দু’ধরনের। হৃদরোগে আর্টারি ব্লক হয় অনেকের। তার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়। আরেক ধরনের হৃদরোগে হৃদযন্ত্র পুরোপুরি কাজ বন্ধ করে দেয়। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বলে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশনেই প্রাণ হারিয়েছেন কেকে। ফুসফুসে জল জমে গিয়েছিল তাঁর। অটোপসি সার্জেনদের মতে, বেশ কয়েক বছর যাবৎ হৃদরোগে ভুগছিলেন কেকে। তবে তা নিয়ে বেশ উদাসীন ছিলেন সংগীত শিল্পী।
[আরও পড়ুন: জুলাই থেকে খুচরো সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ধূমপানে লাগাম টানতে নয়া ভাবনা রাজ্যে!]
প্রয়াত সংগীত শিল্পীর স্ত্রী জানান, ব্যস্ততার মাঝে সময়মতো খাওয়াদাওয়া হত না কেকে’র (KK)। তার ফলে নিয়মিত হজমের সমস্যায় ভুগছিলেন সংগীতশিল্পী। প্রায় প্রতিদিনই হজমের ওষুধ খেতেন কেকে। চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ভুরিভুরি ওষুধ খাওয়ার ফলে সমস্যা প্রকট হতে পারে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। জানা গিয়েছে, কলকাতায় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার সময় থেকে কাঁধে ও হাতে ব্যথার কথা সঙ্গীসাথীদের বলেছিলেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হৃদরোগের ফলে বড়সড় বিপদ যে আসতে চলেছে, কাঁধে ও হাতে ব্যথাই ছিল তার প্রাথমিক লক্ষণ।
উল্লেখ্য, গুরুদাস কলেজ ফেস্টে ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে মঙ্গলবার রাতে শেষবার অনুষ্ঠান করেন কেকে। ওই অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন সংগীতশিল্পী। গরম লাগছে বলে জানান। প্রচণ্ড ঘামতে থাকেন। জোরাল আলো নিভিয়ে দিতে বলেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে পৌঁছন কেকে। লিফটে ওঠার সময় অসুস্থতা আরও বাড়তে থাকে। তা সত্ত্বেও লিফটে ওঠার সময় বেশ কয়েকজন অনুরাগীর সঙ্গে সেলফি তোলেন। তারপর হোটেলে ঢুকে সোফায় বসতে গিয়েই পড়ে যান। সেই সময় টেবিলে ধাক্কা লেগে সামান্য চোট পান কেকে। অনেকেই কেকে’র মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলেই দাবি করেছিলেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তত্ত্ব খারিজ করেন তদন্তকারীরা।