শুভঙ্কর বসু: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দেওয়া সাত দফা নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আরজি জানাল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার এই আরজিতে উচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয় বলে খবর। গত ২ জুলাইয়ে নির্দেশগুলি রাজ্য সরকারের বক্তব্য না শুনেই দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ফের তা ভেবে দেখার আরজি জানিয়েছে সরকার। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন স্থির ছিল ১৩ জুলাই। এখন রাজ্যের নয়া রিভিউ (Review Petition) পিটিশন নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার।
গত ২ তারিখ, এই সংক্রান্ত মামলার হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় (Post Poll Violence) যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ভার রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। এখনও পর্যন্ত যতগুলি অভিযোগ এসেছে সমস্ত ঘটনায় পুলিশকে আলাদা আলাদা মামলা রুজু করতে হবে। শুধু তাই নয়, ফৌজদারি বিধির ১৬৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক অভিযোগকারীর গোপন জবানবন্দি নিতে হবে। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের যাতে আর কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। হিংসায় অনেকের ঘরবাড়ি পুড়েছে, সেক্ষেত্রে রেশন কার্ড হারানোর একটা সম্ভাবনা থাকছে। কারও রেশন কার্ড (Ration Card) হারালেও নতুন করে তাঁর রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকেই। আর কারও রেশন কার্ড হারালেও তাঁকে যেন সাহায্য করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
[আরও পড়ুন: ফের পুলিশের জালে ‘ভুয়ো’ সরকারি আধিকারিক, নীলবাতির গাড়ি-সহ গ্রেপ্তার আইনজীবী]
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশেই গত ২৪ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (National (Human Rights Commission) সাত সদস্যের কমিটি রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসে। শুক্রবার আদালতে মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ২৮ জুন পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। রাজ্যের মোট ১৬৮ জায়গায় ঘুরে দেখেছে মানবাধিকার কমিশনের দল। যত সংখ্যক অভিযোগ আসছে, তা এত কম সময়ে এত অভিযোগ শুনে তার নিষ্পত্তি করা অসম্ভব। মানবাধিকার কমিশনের তরফে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সময় চাওয়া হয়। পুলিশের তরফে সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। যার ভিত্তিতে আদালত পুলিশকে তিরস্কারও করে। কিন্তু মঙ্গলবারের রিভিউ পিটিশনে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, মানবাধিকার কর্মীদের সহযোগিতা করাই হচ্ছে।