নব্যেন্দু হাজরা: আলু ধর্মঘট হচ্ছেই। সোমবার রাত থেকে বাজারে আলু সরবরাহ করবেন না ব্যবসায়ীরা। মন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরও নিজেদের অবস্থানে অনড় তাঁরা। ফলস্বরূপ মঙ্গলবার থেকে বাজারে আলুর ঘাটতি থাকবে। দামও বাড়বে। আর এই সংকটের নেপথ্যে 'সিপিএমের উসকানি' এবং 'বিজেপির ষড়যন্ত্র' দেখছেন মন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকে আড়ালে রেখেই হু হু করে আলু রপ্তানি হচ্ছিল ভিনরাজ্যে। যার জেরে দাম বাড়ছে এ রাজ্যের বাজারে। ফলে পকেটে টান পড়েছে মধ্যবিত্তের। রপ্তানির অভিযোগ পেতেই মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে আলু রপ্তানি নিয়ে যথেষ্ট উষ্মা প্রকাশ করেন। প্রশ্ন তোলেন, কেন তাঁকে না জানিয়ে আলু রপ্তানি হচ্ছে? তাতে রাশ টানতে দায়িত্ব দেন টাস্ক ফোর্সকে। রাজ্যের প্রয়োজন মিটিয়ে তবেই ভিনরাজ্যে রপ্তানি হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। উদবৃত্ত আলু রাজ্য মিড ডে মিলের জন্য কিনে নেবে। কিন্তু ভিনরাজ্যে আলু রপ্তানিতে এই কড়াকড়ি নিয়ে ক্ষুব্ধ আলু ব্যবসায়ীরা। তাঁরা পালটা ধর্মঘটের ডাক দেন। সেই সংকট কাটাতে এদিন বৈঠকে বসেন মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীরা। তাতেও জট কাটল না।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, "মন্ত্রীর সঙ্গে আমরা সোমবার দুপুরে বৈঠকে বসেছিলাম। বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। মন্ত্রী আমাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সোমবার মধ্যরাত থেকে আমাদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত জারি থাকছে।" তবে মঙ্গলবার হুগলির তারকেশ্বরে ব্যবসায়ী ভবনে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ধর্মঘটের ভবিষ্যত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে রাজ্য়ের এই সংকটের নেপথ্যে বিজেপি ও সিপিএমের হাত রয়েছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী। বেচারাম মান্নার কথায়, "বিজেপি রাজ্যকে না জানিয়ে হিলি, চ্যাংড়বান্ধা, মালদহ থেকে প্রচুর আলু বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে রাজ্যে সংকট তৈরি করতে চেয়েছে তারা।" শুধু বিজেপি নয়, প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির মধ্যে সিপিএমের লোকজন রয়েছেন বলেও মত তাঁর। বলেন, "আলু ব্যবসায়ীদের মধ্যে কিছু সিপিএমের লোক আছে। সে জমানার মতো ধর্মঘট সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইছে।"