শিলাজিৎ সরকার: এবারের এশিয়ান গেমসে (Asian Games) ৩৫টি খেলায় সবমিলিয়ে অংশ নিচ্ছেন ৬৫৩ জন ভারতীয় অ্যাথলিট। এঁদের মধ্যে একেবারেই স্বতন্ত্র একটি নাম-প্রণতি নায়েক।
কারণ? কারণটা হল, হাংঝৌ গেমসে দেশের একমাত্র জিমন্যাস্ট হিসাবে অংশ নিতে চলেছেন প্রণতি। পিংলার মেয়ের উপরেই রয়েছে তেরঙ্গা পতাকা তুলে ধরার গুরুদায়িত্ব। ‘একা কুম্ভ’ হয়ে ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের প্রতিনিধি হিসাবে এশিয়াডে যাওয়া সহজ কাজ নয় প্রণতির (Pranati Nayak) কাছে। বলছিলেন, “জিমন্যাস্টিক্সে লড়াইটা একাই করতে হয়। তবে দলে আরও জিমন্যাস্ট থাকলে অনেক সুবিধা হয়। অনুশীলনে কোনও ভুলভ্রান্তি হলে সতীর্থরাই শুধরে দেয়। পাশাপাশি বার সাজানোর মতো বিভিন্ন কাজে সতীর্থরা সাহায্য করে। হাংঝৌয়ে সেগুলো আমাকে একাই করতে হবে।” যোগ্যতা অর্জন করলেও টেকিনক্যাল কারণে এশিয়াডে যাওয়া হচ্ছে না ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের অপর তারকা দীপা কর্মকারের (Deepa Karmakar)। প্রিয় ‘দীপাদি’ পাশে থাকলে সুবিধা হত বলেই মনে করছেন প্রণতি। এই অবস্থায় কোচ অশোক মিশ্রর উপরেই ভরসা রাখছেন এই বঙ্গ-কন্যা।
[আরও পড়ুন: নতুন সংসদ ভবন আসলে মোদি মাল্টিপ্লেক্স! জয়রাম রমেশের খোঁচা ঘিরে শোরগোল]
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্পোর্টস ইভেন্টে কারা হতে পারেন পদক জয়ের পথে কাঁটা? প্রণতির জবাব, “চিনের জিমন্যাস্টদের সামলানো সবসময় কঠিন। জাপানেও একাধিক ভাল জিমন্যাস্ট আছে। এছাড়া কোরিয়া, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলি চমকে দিতে পারে।” পালটা চমক দিতে প্রণতির হাতিয়ার সুকুহারা ভল্ট। তাঁর কথায়, “আমি অনেকদিন ধরেই সুকুহারা ভল্টে সাফল্য পাচ্ছি। এশিয়াডেও তাই করব। সুকুহারা ৩৬০ এবং সুকুহারা ৭২০, দুটোতেই আমি স্বচ্ছন্দ্য। তবে কোন ভল্ট দেব তা এখনও ঠিক করিনি। প্রতিযোগিতায় অন্যরা কে কী ভল্ট দিচ্ছে, তা বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।” এশিয়াডে ভল্ট, আনইভেন বার, ফ্লোর এবং ব্যালেন্স বিম–চার বিভাগেই নামবেন। তবে ভল্টেই পদক আসবে, মনে করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ছন্দে ফিরছে মণিপুর, ১০০ দিন পর চালু ইন্টারনেট পরিষেবা]
একা হলেও পদকের অন্যতম দাবিদার হিসাবেই গেমস ভিলেজে পা রেখেছেন প্রণতি। কলকাতা সাই থেকে উঠে আসা এই জিমন্যাস্টই একমাত্র ভারতীয় যিনি জোড়া পদক জিতেছেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে। পাশাপাশি সদ্যই ভল্টে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জ কাপে (World Challange Cup)। এশিয়াডের আগে এই সাফল্য বাড়তি আত্মবিশ্বাসী করছে প্রণতিকে। “আন্তর্জাতিক মঞ্চে লড়তে নামা আমার কাছে নতুন নয়। এটা আমার তৃতীয় এশিয়াড। পাশাপাশি টোকিও অলিম্পিকেও লড়েছি। সেসব অভিজ্ঞতা এবার সাহায্য করবে। তাছাড়া কোনও বড় প্রতিযোগিতার আগে আন্তর্জাতিক স্তরে পদক জয় সবসময়ই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে,” সরাসরিই বলছেন তিনি। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই পদকের খোঁজে নামবেন প্রণতি।