স্টাফ রিপোর্টার: দশমীর প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য গঙ্গায় ১৭টি ঘাটে প্রস্তুত কলকাতা পুরসভা (KMC) ও পুলিশ (Kolkata Police)। নবান্নের নির্দেশ মেনে আগামী চারদিন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে। শুক্রবার প্রথম দিন বাড়ির প্রতিমা ও ছোট বারোয়ারি পুজোগুলির প্রতিমা বিসর্জন হবে। শনিবার বিসর্জনের সংখ্যা কম হতে পারে বলে মনে করছে পুরসভার এই কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ও বিধায়ক দেবাশিস কুমার।
আগামী ১৮ অক্টোবর, সোমবার বিসর্জনের শেষদিন। অবশ্য এ বছরই গঙ্গার তীরে হেস্টিংসে প্রতিমা বিসর্জনে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে পুরসভা। পুরপ্রশাসক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন, “বিসর্জনে দূষণ নিয়ে অভিযোগ কাটাতেই হেস্টিংসে দই ঘাটের কাছে গঙ্গার ঘাটে গঙ্গাজল দিয়েই হোসপাইপ ব্যবহার করে প্রতিমা গলানোর উদ্যোগ নিয়েছি।” গতবছরের মতোই করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের সতর্কতা ও বিধি মেনেই গঙ্গার ১৭টি ঘাটে বিসর্জনের ব্যবস্থা করেছে পুরসভা। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিড় হবে জাজেস ঘাট, বাজে কদমতলা ও দই ঘাটে। স্বভাবতই সেখানে ক্রেন, পুলিশ ও পুরকর্মীরা বেশি সংখ্যায় থাকবেন।
[আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটে শূন্য পেয়েও জনসংযোগে তৎপর, শারদোৎসবে বুকস্টলের সংখ্যা বাড়াল বামেরা]
শুক্রবার দুপুর বারোটার পর থেকেই গঙ্গায় বিসর্জন শুরু হওয়ার কথা। প্রথমদিন প্রায় দেড় হাজারের বেশি প্রতিমা গঙ্গায় বিসর্জন হওয়ার কথা। নিরাপত্তার দায়িত্বে ৩ হাজার পুলিশ কর্মী ও নিরঞ্জনে সাহায্য করতে হাজির থাকছেন দু’হাজারের বেশি পুরকর্মী ও অফিসার। গঙ্গাবক্ষে স্পিড বোটে চলবে নজরদারি। থাকবে রিভার ট্রাফিক গার্ড ও বিপর্যয় মোকাবিলা টিম। বিসর্জন দিতে আসা ব্যক্তিদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ২টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে চলবে পুলিশের নজরদারি। ডিজে অথবা মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট কয়েকজনকে ঘাট চত্বরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতিমার জন্য গাড়ির সংখ্যাও নির্দিষ্ট।
অন্যদিকে, গঙ্গার ঘাটের সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হবে কলকাতার ৩৪টি পুকুরেও। তাই প্রত্যেকটি পুকুরেও থাকছে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা। একই সঙ্গে কোভিড (Covid-19) বিধি অগ্রাহ্য করে যদি কোনও পুজো কমিটি শোভাযাত্রা বের করে, তবে পুলিশ সেই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে। ঘাটের পাশাপাশি শহরের ৩৪টি পুকুরেও যাতে বিসর্জন দেওয়া যায়, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুজো (Durga Puja 2021) উদ্যোক্তাদের দেওয়া অনুমতিপত্র অনুযায়ী, নির্ধারিত দিন, সময় ও নির্দিষ্ট ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে। নিষিদ্ধ বাজি পোড়ানো যাবে না।
বিসর্জনের ঘাটে পুজো কমিটির সদস্যদের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। পুলিশের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে তাঁদের। ঘাটের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। নিমতলা ঘাট, বাজে কদমতলা ঘাট, গোয়ালিয়র ঘাট ও বিচালি ঘাটের আশপাশে পুলিশের চারটি যন্ত্রচালিত নৌকা থাকছে। এই নৌকায় থাকা কর্মীরা প্রতিমার কাঠামো টেনে নেবেন, যাতে পরের প্রতিমা বিসর্জন দিতে সমস্যা না হয়। গঙ্গায় যদি বান আসে, তাহলে দুর্ঘটনা এড়াতে তা পুজো উদ্যোক্তাদের আগাম জানিয়ে দিতে হবে। কারণ, এর আগেও বান আসার কারণে কলকাতার ঘাটে ঘটেছে দুর্ঘটনা। দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের লায়েলকা পুকুর, পাটুলির পাটুলি পুকুর, হরিদেবপুরের ইটখোলা পুকুর, সরশুনা ঝিল, মুকুন্দপুর পুকুরে বিসর্জন হবে।