সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এনসেফালাইটিসে মৃত্যু মিছিল বিহারের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশাকে বেআব্রু করে দিয়েছে। রাজ্যজুড়ে দারিদ্র আর অপুষ্টির চিত্রটা যে কী ভয়াবহ তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। সরকারি হিসেবেই এখনও পর্যন্ত ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ, একের পর এক শিশুমৃত্যুর পরও কার্যত নির্বিকার প্রশাসন। রাজ্যের হাসপাতালগুলির অবস্থাও তথৈবচ। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, এত শিশু মৃত্যুর পরও বিহার সরকারের যেন মানুষের থেকে গো-প্রীতিটাই বেশি। গো-মাতার প্রতি ভালবাসা এতটাই যে, যে হাসপাতালগুলিতে মানুষের চিকিৎসা হওয়ার কথা, সেই হাসপাতালগুলিকে বকলমে গোশালায় পরিণত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: এনসেফালাইটিসে মৃত্যুমিছিল, বিহার সরকারকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের]
এনসেফালাইটিসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মুজফ্ফরপুর। সেই মুজফ্ফরপুরের একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলিকে এককথায় খোয়াড় বানিয়ে ফেলেছেন স্থানীয়রা। মতিহারি জেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র কার্যক্ষেত্রে গোশালায় পরিণত হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে রোগী বা চিকিৎসক কোনওটিরই অস্তিত্ব নেই। বরং ঠাঁই হয়েছে গোমাতার। হাসপাতালের প্রতিটি ঘরে বাঁধা রয়েছে গরু। তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে যথারীতি। কোথাও কোথাও আবার গরুর জন্য আলাদা করে করা হয়েছে স্নানের জায়গা। এসবই হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। মূলত বেওয়ারিশ গরুর জন্য। অথচ গ্রামবাসীরা উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
[আরও পড়ুন: “ইভিএম নয়, ব্যালট চাই”, সংসদের বাইরে পোস্টার ঝুলিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূল সাংসদদের]
লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, আশেপাশের কোনওগ্রামে কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও যেতে হচ্ছে অন্তত ১০ কিলোমিটার। এলাকার একমাত্র আধুনিক সুযোগসুবিধা যুক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র মতিহারি সদর হাসপাতাল। কিন্তু, আশেপাশের ছোটখাটো হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা না হওয়ার দরুণ এই হাসপাতালটিতে চাপ বাড়ছে। একটি বেডে জায়গা দেওয়া হচ্ছে দুই রোগীকে। যার জন্য পরিষেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে আমআদমির। অথচ গো সেবা ভালমতোই হচ্ছে। তাদের আক্ষেপ যদি হাসপাতালগুলো গোশালাতে পরিণত না হত, তাহলে হয়তো বিনা চিকিৎসায় এত শিশুকে মরতে হত না।
The post বন্ধ চিকিৎসা, বিহারের এনসেফালাইটিস প্রবণ এলাকার হাসপাতালগুলি যেন গোশালা appeared first on Sangbad Pratidin.