সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাতের অন্ধকারে অতর্কিতে নেমে এসেছে মৃত্যু। সোমবার রাতে ওয়ানড়ের একাধিক জায়গায় ভয়ংকর ভূমিধসের ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ পাওয়া খবরে, এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩। মাটির নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানার পর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে অর্থ সাহায্য ঘোষণা করেছেন তিনি।
দুর্ঘটনার কথা জানার পর এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'ওয়ানড়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনার কথা শুনে আমি মর্মাহত। এই ভূমিধসে যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের সমবেদনা জানাই। আহতরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন সেই প্রার্থনা করি। যেখানে যেখানে ধস নেমেছে সব জায়গায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।' এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, কেরলের এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসাহয্য করা হবে।
[আরও পড়ুন: কেরলের ওয়ানড়ে ভয়ংকর ভূমিধস, শিশু-সহ মৃত ৬, আটকে শতাধিক]
ওয়ানড় দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা ওয়ানড়ের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধীও। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'মেপ্পাদির কাছে মর্মান্তিক ভূমিধসের ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই ঘটনায় যে সব পরিবার তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন সেই শোকস্তব্ধ পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই। প্রার্থনা করছি যারা এখনও আটকে রয়েছেন তাঁদের নিরাপদে উদ্ধার করা হবে।' পাশাপাশি কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাহুল গান্ধী স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে যথাযথ সাহায্য করার। দলের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ কেসি বেণুগোপাল রাওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গোটা পরিস্থিতির নজর রাখার। রাহুল নিজেও ওয়ানাড়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। যদিও অধিবেশন চলার ফলে তা সম্ভব হবে কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এই ঘটনায় এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি লেখেন, 'কেরালার ওয়ানড়ে ভূমিধসের ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন। এনডিআরএফ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। দ্বিতীয় উদ্ধারকারী দলটি ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে। এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।'
[আরও পড়ুন: লাদাখেও দাবদাহ! প্রবল গরমে বাতিল বিমান, উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা]
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে ওয়ানড়ের কালপেট্টা থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেপ্পাদির পাহাড়ি অঞ্চলের একাধিক পাহাড়ে ধস নামার খবর পাওয়া যায়। রাত ১টা নাগাদ মুন্ডাক্কাই টাউনের কাছে প্রথম ধসের খবর আসে। এর ঘণ্টা তিনেক পর ওই এলাকায় এক স্কুলের কাছে দ্বিতীয় ধস নামে। আশেপাশের বাড়ি ও দোকানের মধ্যে জল কাদা ঢুকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভেসে যায় একাধিক গাড়ি। এই ঘটনায় এলাকায় অন্তত ৪০০টি পরিবার আটকে পড়ে। ভেঙে পড়ে একটি ব্রিজ। যার জেরে ব্যহত হয় উদ্ধারকাজ। ঘটনার পর স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে হেল্পলাইন নম্বর 9656938689 এবং 8086010833 চালু করার পাশাপাশি সব সরকারি এজেন্সিকে উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। উদ্ধারকাজে নামানো হচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টারও।