স্টাফ রিপোর্টার: সাবধানের মার নেই! রাজ্যের ৫ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ স্বাস্থ্যভবনের স্ক্যানারে! উদ্বেগ, আর জি করের মতো সংক্রামক ব্যাধি ছড়ায়নি তো? তথ্য পেয়ে উদ্বেগে নবান্নের শীর্ষকর্তারাও। ডা. সন্দীপ ঘোষের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের একাধিক কর্তার অভিযোগ, অধ্যাপক আর জি কর ছাড়িয়ে সন্দীপ ঘোষের ছায়া জেলার মেডিক্যাল কলেজেও প্রসারিত ছিল। এখন সেই সন্দীপ ঘোষের সার্ভিস ফাইল খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্যভবন। একইসঙ্গে ২০২১ সাল থেকে যাঁরা বিভিন্ন জেলায় উপাধ্যক্ষ-অধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করছেন, স্বাস্থ্যভবনের স্ক্যানারে তাঁরাও রয়েছেন।
কেন এমন পদক্ষেপ স্বাস্থ্যভবনের? স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা বিভাগের একাধিক আধিকারিক সংশয় প্রকাশ করছেন, অকারণে কোনও ছাত্রকে ফেল করিয়ে দেওয়া অথবা কোনও সেমেস্টারের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার মতো বেশকিছু অভিযোগ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার টেবিলে এসেছিল। প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে নবান্নের নির্দেশে। চলতি বছরে সদ্য মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট হওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটাই কম। এইসব টুকরো টুকরো তথ্য জোড়া দিয়েই কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে স্বাস্থ্যভবন।
[আরও পড়ুন: ‘প্রতিবাদের নাম মৃত্যু’, আর জি কর কাণ্ডে মিছিলের পর স্কুলে হুমকি পোস্টার]
সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এক সময়ের ডাকসাইটে বাম চিকিৎসক নেতা ডা. ইন্দ্রজিৎ সাহা, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা.প্রবীর দেব, উপাধ্যক্ষ ডা. কাঞ্চন দেব, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা.সুজয় মিস্ত্রী, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা.করবী বড়াল এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক্সের এক মহিলা অধ্যাপকের কাজকর্ম বিগত চার বছর বা তারও আগে যতদূর সম্ভব খতিয়ে দেখা হবে। সেইসব মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন ও রোগী পরিষেবা খতিয়ে দেখার জন্য আলাদা এক্সপার্ট টিম গঠন করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যাচাই করার বিষয়েও মঙ্গলবার আলোচনা হয়েছে। আচমকা একলপ্তে এতজন অধ্যক্ষ,উপাধ্যক্ষর কাজকর্ম নিয়ে কেন সংশয়? স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার আর কোনওভাবেই মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন নিয়ে কোনওরকম আপস করবে না। চুপ করে থাকবে না রোগীস্বার্থ নিয়ে। তাই নবান্নের বিশেষ নির্দেশেই এই পদক্ষেপ।’’
এই কর্তার কথায়, রাজ্য সরকার এনএমসির অনুমতি নিয়ে চলতি বছরেই ছটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছে। এনএমসি গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের বিভিন্ন কোর্স চালুর জন্য জলের মতো টাকা খরচ করছে। কিন্তু মুষ্টিমেয় চিকিৎসক, অধ্যাপক প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর একই কলেজে ‘ছড়ি ঘোরাবেন’ এমনটা কোনওমতেই চলতে পারে না। সরকারি নিয়ম মেনে বদলি হবে। প্রতিটি কাজ প্রয়োজনে খতিয়ে দেখা হবে।