রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জয়গাঁর শিক্ষক সান্তাবীর লামা খুনে চাঞ্চল্যকর মোড়! ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠ মোর্চা নেতা রহিত থাপা। গ্রেপ্তার রহিতের পরিচিত পাশাং লামা নামে আরও একজন। দুজনকেই মঙ্গলবার আদালতে তুললে বিচারক ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। খুনের ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
কে এই রহিত থাপা? রহিত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যে প্রতিনিধি দল দেখা করেছিল সেখানেও ছিলেন তিনি। পুলিশের খাতায় আগে থেকে নাম ছিল তাঁর। ২০১৭ সালে ডুয়ার্সে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এবার শিক্ষক খুনের ঘটনায় ডুয়ার্সের প্রথম সারির এই মোর্চা নেতার গ্রেপ্তারিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
কিন্তু মোর্চা নেতার সঙ্গে এই খুনের ঘটনার যোগ কোথায়? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোর্চা নেতা রহিত থাপা ও পাশাং লামা খুন হওয়া শিক্ষকের গাড়ি বন্দক দিয়ে নেপালের এক ক্যাসিনোয় জুয়া খেলেছিলেন। তাতে হেরে গিয়ে গাড়িটি হাতছাড়া হয় তাঁদের। গাড়ির জন্য সান্তাবীরকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় ওই শিক্ষক বার বার রহিতের বাড়িতে যেতেন। তাতেই বিরক্ত হয়ে ওই শিক্ষক যাতে টাকা চাইতে না আসেন, তার দায়িত্ব পাশাং লামাকে দেন রহিত। পাশাং ওই শিক্ষককে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন বলে খবর। একই সঙ্গে সান্তাবীরকে পৃথিবী থেকে সরাতে পান্ডু রাই ও বিজয় সুব্বাকে সুপারি দেন। বিজয় ও পান্ডু মিলে শিক্ষককে খুন করে। রবিবার দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জয়গাঁর এসডিপিও প্রশান্ত দেবনাথ বলেন, "এই খুনের ঘটনায় আমরা এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। গাড়ির টাকা নিয়ে বিবাদের জেরেই ওই শিক্ষক খুন হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।"
উল্লেখ্য, ১৫ নভেম্বর ভারত-ভুটান সীমান্তের জয়গাঁর সুকরাজোত এলাকায় শিক্ষককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। শ্বাসনালী কেটে খুন করে গোপনাঙ্গ কেটে মৃতের মুখে ঢুকিয়ে রাখা হয়। এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। প্রথমে মহিলাঘটিত কোনও কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটে বলে অনুমান করে বিভিন্ন মহল। কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই গোপনাঙ্গ কেটে মুখে ঢুকিয়ে রেখেছিল খুনিরা।