অভিরূপ দাস: রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ছোট্ট একটা অক্ষরের ভুল। যার জন্যেই ঘটে গেল সাঙ্ঘাতিক কাণ্ড। নিজের বাড়ি বেচতে ছুটলেন রিপোর্ট প্রাপক নীরাজ বনসল। রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে হাত পা ঠান্ডা হওয়ার জোগাড়। শেষমেশ জানতে পারলেন ভুল করে ওই অক্ষর ছেপেছে ডায়গনস্টিক সেন্টার। ক্ষুব্ধ নীরজ অভিযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে (West Bengal Clinical Establishment Regulatory Commission)। গোটা ঘটনায় অত্যন্ত রুষ্ট স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারকে নীরাজ বানসলের কাছে চিঠি লিখে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোনারপুরের অভিজাত আবাসনের বাসিন্দা নীরাজ বনসল(৪৩)। রক্ত পরীক্ষা করেছিলেন অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক সেন্টারে। রিপোর্টের তলায় মন্তব্যের জায়গায় লেখা ছিল লিম্ফোসাইটোসিস। শরীরে শ্বেত রক্তকণিকা বেড়ে গেলে চিকিৎসকরা এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন। সাধারণত রক্তের ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়কে লিম্ফোসাইটোসিস (Lymphocytosis) বলা হয়। রিপোর্ট দেখে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নীরজ। ব্লাড ক্যানসার চিকিৎসার খরচ বিপুল। আবাসনে নিজের ফ্ল্যাট বেচার সিদ্ধান্ত নেন নীরজ। দুশ্চিন্তায় তাঁর রাতের ঘুম উড়ে যায়।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে দুগ্ধশিল্প প্রসারে বড় উদ্যোগ, চালু হচ্ছে বাংলার নিজস্ব সংস্থা ‘বাংলা ডেয়ারি’]
শেষমেশ ওই রিপোর্ট নিয়েই এক চিকিৎসকের কাছে যান। ব্লাড ক্যানসারের রোগীর কোনও উপসর্গই ছিল না নীরজের। সন্দেহ হয় চিকিৎসকের। অসুখ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তিনি আরও একবার রক্ত পরীক্ষা করতে বলেন নীরজকে। এবার অন্য এক ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে রক্ত পরীক্ষা করান নীরজ। দেখা যায় ক্যানসারের লেশমাত্র নেই নীরজের শরীরে।
[আরও পড়ুন: ভিড় এড়াতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী, বাড়তে পারে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের সংখ্যা ও সময়সীমা]
ক্ষুব্ধ নীরজ অভিযোগ করেন রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে। বলেন, ভুল রিপোর্টের জন্য উদ্বেগে মরতে বসেছিলাম আমি। এর দায় কার? অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠায় কমিশন। তারা জানায়, কম্পিউটারে ছাপার ভুল হওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক সেন্টারকে (Apollo diagnostic centre) নির্দেশ দেওয়া এই ভুলের জন্য হয়েছে চিঠি লিখে ক্ষমা চাইতে হবে। অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করতে ২ হাজার ৬৯০ টাকা লেগেছিল নীরজের সেটাও তাকে অবিলম্বে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, অন্য যে ডায়গনস্টিক সেন্টারে রক্ত পরীক্ষা করেছিলেন নীরজ তার খরচও দিতে হবে অ্যাপোলো ডায়গনস্টিক সেন্টারকে।