নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি : বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের (Ex chief Justice of India Ranjan Gogoi) বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনল তৃণমূল (TMC) । এইসঙ্গে প্রতিবাদ জানিয়ে সংসদের এপিক কমিটিকে চিঠি লিখলেন তৃণমূল সাংসদ মৌসম বেনজির নূর (Mausam Noor) ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার (Jawhar Sircar)।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের আত্মজীবনী ‘জাস্টিস ফর দ্য জাজ: অ্যান অটোবায়োগ্রাফি'(Justice For The Judge: An Autobiography)। নিজের সেই বইয়ের প্রমোশনে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আলাপচারিতায় দেখা যাচ্ছে গগৈকে। অভিযোগ, তেমনই একটি আলাপচারিতায় রঞ্জন গগৈ বলেন, “আমার ইচ্ছে হলে আমি রাজ্যসভায় যাই। আমি মনোনিত সদস্য। কোনও দলের লোক না।” আরও বলেন, “রাজ্যসভার ম্যাজিকটা কোথায়? আমি যদি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হতাম তাহলে বেতন, ভাতার দিক থেকে ভালোই থাকতাম। কিন্তু আমি রাজ্যসভা থেকে একটি পয়সাও নিচ্ছি না।”
বিরোধীদের অভিযোগ, এমন মন্তব্য করে রাজ্যসভার অসম্মান করেছেন গগৈ। তার জেরেই এদিন গগৈয়ের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা হয়েছে। এইসঙ্গে মৌসম নূর ও জহর সরকার সংসদের এপিক কমিটিকে একটি অভিযোগ পত্রও লিখেছেন।
[আরও পড়ুন: গোমাতাকে বাঁচাতে সঙ্গে তলোয়ার রাখুন, বিতর্ক উসকে হিন্দুদের পরামর্শ VHP নেত্রী সাধ্বীর]
সূত্রের খবর, গগৈকে নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে একমত হয়েছে কংগ্রেস-সহ (Congress) অন্য বিরোধীরাও। এই বিষয়ে বিরোধীরা একটি বৈঠকও করেছেন ইতিমধ্যে। ভবিষ্যতে সব বিরোধী একযোগে গগৈয়ের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গগৈয়ের বই নিয়ে আগেই বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। বইতে অযোধ্যা মামলায় রায়দানকারী বেঞ্চের সদস্যদের একটি ছবি রয়েছে। তাতে ক্যাপশন করা হয়েছে, ‘‘অযোধ্যা রায়ের পরে আনন্দ।’’ গগৈ জানিয়েছেন, অযোধ্যা রায় দেওয়ার পরে সন্ধ্যায় বেঞ্চের অন্য সদস্যদের দিয়ে দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে যান তিনি। সেখানে চিনা খাবার ও ওয়াইন খান সকলে মিলে।
[আরও পড়ুন: বড় যোগদানের জল্পনায় ঠাসা কর্মসূচি, গোয়ায় ভোটপ্রচার শুরু মমতার, সঙ্গী অভিষেক]
বিতর্কিত ঐতিহাসিক রায়ের পরে ‘উৎসব’-এর ছবি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি সাক্ষাৎকারে গগৈ উত্তর দিয়েছেন, ‘‘উৎসব নয়। বন্ধুদের নিয়ে নৈশভোজে গেলে কি আপনারা বাইরের খাবার খান না?’’ কিন্তু মামলায় হেরে যাওয়া পক্ষের চোখে কি বিষয়টি অসংবেদনশীল বলে মনে হবে না? গগৈয়ের জবাব, ‘‘এই বিচারপতিরা চার মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। আমাদের মনে হয়েছিল একটু বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।’’