সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস সমর্থকদের একটা বড় অংশ মনে করেন তাঁকে ঠাকুমা ইন্দিরার মতোই দেখতে। তেমনই ইন্দিরার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও সক্রিয় রাজনীতিতে আসবেন এমনটাই মনে করতেন তাঁরা। তবে এতদিন তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। আগের লোকসভা নির্বাচনে মা আর দাদার হয়ে ভোট প্রচারে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এবারের ভোটেই প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মতো ওজনদার রাজ্যের প্রচারে। এবার রাজীব-তনয়ার ঘোষণা, দল চাইলে ভোটের ময়দানে নামতে কোনও অসুবিধা নেই তাঁর। যদিও, ‘এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি’।
ভোট ঘোষণার সামান্য কিছুদিন আগেই কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। তবে তার পর থেকেই জোরকদমে নেমে পড়েছেন কাজে। উত্তরপ্রদেশে গত লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছিল কংগ্রেসের। সোনিয়া ও রাহুল ছাড়া এই রাজ্য থেকে জিততে পারেননি কোনও কংগ্রেস নেতাই। এবার তাই গোবলয়ের এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর পায়ের তলার মাটি ফিরে পেতে প্রিয়াঙ্কার উপরেই ভরসা রেখেছে দল। কিন্তু কিছুদিন আগে পর্যন্তও প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছিলেন প্রচারে অংশ নিলেও ভোটে লড়াই করার কোনও সম্ভাবনা তাঁর নেই। এদিন তার থেকে কিছুটা হলেও সরে এসে কংগ্রেসের নতুন সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দল চাইলে ভোটে লড়তে আপত্তি নেই তাঁর। এতদিন তিনি ভোটে লড়ছেন কি না এই প্রশ্নে স্মিতমুখে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতেন প্রিয়াঙ্কা। এদিনই প্রথম আমেঠির সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, “কেন নয়?”
[আরও পড়ুন: জল্পনা সত্যি করে কংগ্রেসেই যোগ দিলেন অভিনেত্রী উর্মিলা মাতণ্ডকর]
তার পরেই তাঁর হালকা মেজাজে পালটা জবাব, “এমনকী, আপনিও পারেন।” তবে তাতেই থেমে না থেকে প্রিয়াঙ্কার বক্তব্য, “আমার দল চাইলে আমি নিশ্চয়ই ভোটে লড়ব।” বুধবার দাদার কেন্দ্রে প্রচারের কাজে থাকলেও বৃহস্পতিবারই মায়ের কেন্দ্র রায়বরেলি চলে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা। এই প্রথম রাজনীতির মঞ্চে গান্ধী পরিবারের নবতম সদস্যের ভোটের লড়ার ইঙ্গিত মিলল। সঙ্গে আরেক ধাপ এগিয়ে প্রিয়াঙ্কা জানালেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুলই। উত্তরপ্রদেশের মতো ওজনদার রাজ্যের প্রচারের দায়িত্ব প্রিয়াঙ্কার উপর দেওয়ার পর থেকেই তাঁর ভোটে লড়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এমনকী অসুস্থ সোনিয়ার জায়গায় তিনিই রায়বরেলি থেকে লড়তে পারেন এমন কানাঘুষোও শোনা যেতে থাকে। কিন্তু পরে কংগ্রেসের তরফে জল্পনায় ইতি টেনে জানিয়ে দেওয়া হয় রায়বরেলি থেকে লড়ছেন সোনিয়াই। এমনকী বারাণসী থেকে মোদির বিরুদ্ধেও প্রিয়াঙ্কা লড়তে পারেন এমন সম্ভাবনাও শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস তা খারিজ করে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের একটা বড় অংশ অবশ্য মনে করে প্রিয়াঙ্কা এই রাজ্য থেকে ভোটে লড়লে দলের জন্য তা লাভদায়ক হবে। প্রিয়াঙ্কার জনসভা, ঘন ঘন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাবার্তা, তিন দিনের গঙ্গাযাত্রা কর্মসূচি-সহ অন্যান্য সক্রিয় কার্যকলাপও তাঁদের ভাবনাকে সমর্থন করেছে।
এদিনের জবাবের পর উত্তরপ্রদেশ রাজ্য কংগ্রেসের একটা বড় অংশ নিশ্চিত, প্রিয়াঙ্কা এই রাজ্য থেকেই মনোনয়ন পেশ করতে চলেছেন। যদিও প্রিয়াঙ্কা নিজে শেষ পর্যন্ত বলেছেন, কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। নির্বাচনী প্রচারে রাহুল যে দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য বছরে ৭২ হাজার টাকা সাহায্যের ‘ন্যায়’ প্রকল্পের প্রস্তাব করেছেন, বিজেপি এবং মায়াবতী তার কড়া সমালোচনা করেছেন। বলা হয়েছে কংগ্রেস ‘ধাপ্পা’ দিচ্ছে। এদিন তার জবাবে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “কংগ্রেস কখনও ধাপ্পা দেয় না।” উলটে বিজেপি যে ‘জুমলাবাজি’ (হাওয়ায় কথা ছুড়ে দেওয়া) করছে তার বিরুদ্ধে কংগ্রেস কর্মীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। গত কয়েকদিনে প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধেও আমেঠিতে পোস্টার ক্যাম্পেন শুরু করেছে বিরোধীরা। গত ভোটে দাদার কেন্দ্রে প্রচারে এলেও তার পর থেকে কেন তাঁকে আর দেখা যায়নি তা নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসকে এ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে প্রচারে সময় দিতে পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী। গান্ধী পরিবার ও প্রিয়াঙ্কার অবমাননা করতেই যে এই ধরনের প্রচার তারও উল্লেখ করেন তিনি। এই পর্যায়ে আমেঠি, রায়বরেলি ছাড়াও অযোধ্যায় প্রচার করবেন প্রিয়াঙ্কা।
The post সিদ্ধান্ত বদলে লোকসভা ভোটে লড়তে চান প্রিয়াঙ্কা appeared first on Sangbad Pratidin.