দুলাল দে: একদিকে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) যখন অমরিন্দর সিংয়ের মতো ফুটবলারকে সই করিয়ে নিচ্ছে, সেখানে ইস্টবেঙ্গল এখনও আটকে চুক্তিপত্রে সই আর টেবিলে আলোচনায় বসা নিয়ে। কিন্তু দল কী হবে, ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের কী হবে, কারও কোনও মাথাব্যথা নেই।
গত মরশুমে শেষ সময়ে ISL খেলার সুযোগ আসার জন্য ভাল দল গড়তে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এবার? এবার তো মনে হচ্ছে আরও ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে এগোতে চলেছে। ৯ জুন থেকে শুরু হচ্ছে ফেডারেশনের ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন। একমাত্র এসসি ইস্টবেঙ্গল ছাড়া আইএসএলের বাকি সব ক্লাব নতুন ফুটবলারদের সই করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু কী হবে লাল-হলুদে। যদি এই মরশুমেও শেষ সময়ে আইএসএল খেলার সুযোগ আসে, গত মরশুমের থেকেও খারাপ ফল হতে বাধ্য। কারণ, হাতে যে একজন ফুটবলারও নেই! ৯ জুন থেকে ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন শুরু হচ্ছে। সেখানে অন্য ক্লাবগুলো সব ভাল ভারতীয় ফুটবলারকে সই করিয়ে নেওয়ার পর, যাঁরা পরে থাকবে, তাঁদেরই সই করাতে হবে। আর এটা এখন ধ্রুব সত্য, ভারতীয় ফুটবলে বর্তমানে এমনিতেই ভাল ফুটবলারের আকাল। তাই যদি শেষ মুহূর্তে সমস্যা মিটে আইএসএল খেলার সম্ভাবনাও তৈরি হয়, তাহলেও কী দল হবে, সহজেই অনুমেয়।
[আরও পড়ুন: টোকিও অলিম্পিকের আগেই বিপাকে ভারত, ডোপ পরীক্ষায় ব্যর্থ ১ কুস্তিগির]
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হস্তক্ষেপে গত মরশুমে আইএসএল খেলার জন্য ইনভেস্টর পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। একদম হারা ম্যাচকে একার ক্ষমতায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এনে দেওয়া সেই ইনভেস্টর এই মরশুমেও শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না জানা নেই। ফলে মুখ্যমন্ত্রী যে নতুন করে ফের লাল-হলুদের ইনভেস্টর খুঁজে দেওয়ার জন্য আগ্রহী হবেন না, বলাই বাহুল্য। তাহলে কী করবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব?
এরই মধ্যে ১২ জুন থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের জন্য ফেডারেশনের ওয়ার্কশপ। মানে, প্রত্যেক ক্লাব প্রতিনিধিদের ডাকা হবে, এই মরশুমে ক্লাব লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় এএফসি নতুন কি সব নিয়ম সংযোজিত করবে, তা ওয়ার্কশপের মাধ্যমে জানানোর জন্য। ১২ জুনের পর থেকে ফেডারেশনের সেই ক্লাব লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে সব ক্লাবই। একমাত্র ফেডারেশনের তরফে আমন্ত্রণ পেয়েও ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের সেই ওয়ার্কশপে যোগ দিচ্ছে না, এসসি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। অথচ, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের যাবতীয় খেলা ধুলোর লাইসেন্স এই মুহূর্তে শ্রী সিমেন্টের কাছে। আপাতত দু’পক্ষের লড়াইয়ে যা পরিস্থিতি, তাতে চুক্তিছিন্ন হলে একটা সময় পর্যন্ত ঠিক ছিল, শুধু ২২ কোটি টাকার বোঝা ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে ফেলে দেবে শ্রী সিমেন্ট। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, শ্রী সিমেন্ট কর্তারা ক্লাবের উপর এতটাই বিরক্ত হয়ে উঠেছেন যে, মূল চুক্তিপত্রে শেষ পর্যন্ত সই না হলে, শুধুমাত্র টার্মশিটের উপর ভিত্তি করে প্রথম বছরেই যে ৫০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন, তার পুরোটাই ক্ষতিপূরণ হিসেবে চেয়ে নেওয়া হবে। নাহলে ক্লাব লাইসেন্সিং ফিরবে না।
আর যদি ক্ষতিপূরণ না পেয়ে শ্রী সিমেন্ট লাইসেন্স ফেরত না দেয়, তাহলে আইএসএল তো দূর অস্ত, আই লিগ, কলকাতা লিগ কোথাও খেলতে পারবে না ইস্টবেঙ্গল।
[আরও পড়ুন: ঘোষিত কোপা আমেরিকার ক্রীড়াসূচি, কবে মাঠে নামছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা?]
এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে কোনও পক্ষই নমনীয় মনোভাব নিতে চলেছে এরকম কোনও খবর নেই। ফলে এফএসডিএল (FSDL), ফেডারেশন কেউই জানে না, ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল খেলার ভবিষৎ কী? কার এগ্রিমেন্ট ঠিক, ক্লাবের না কোম্পানীর? আগ্রহ নেই সাধারণ সমর্থকদের। লাল-হলুদ সমর্থকরা শুধু জানতে চায়, খেলা কবে হবে? আগ্রহ শুধু একটাই। ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়ে যাচ্ছে। ইস্টবেঙ্গল এই মরশুমে আইএসএল খেলবে তো?