সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বরষার জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে জামাখানি জাল বানিয়ে মাছ ধরা, একসঙ্গে বায়োস্কোপ দেখা, হাসি-কান্না, রাগ-খুনসুটি — কত কিছুই থাকে ছোটবেলার বন্ধুত্বে। নিখাদ ভালবাসার এমন এক উপাখ্যান যা সারাটা জীবন মনের ভিতরে থেকে যায়। এমনই বন্ধুত্বের কাহিনি নিয়ে তৈরি প্রসূণ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দোস্তজী’ (Dostojee)। বিশ্বের ২৬টি দেশে হয়েছে ছবির প্রিমিয়ার। ঝুলিতে রয়েছে ৮টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এবার সাধারণ দরবারে আসতে চলেছে সিনেমাটি। আগামী ১১ নভেম্বর দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পাবে ‘দোস্তজী’। শুক্রবার ছবির ট্রেলার প্রকাশ করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)।
বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং বম্বে ব্লাস্টের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে দুই ভিন্নধর্মী শিশুর বন্ধুত্বের গল্প বলে ‘দোস্তজী’। সুন্দর এই গল্প প্রসেনজিতের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। তাইতো ছবিটি নিবেদনা করছেন তিনি। বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে সাংবাদিক বন্ধুদের নিজের বাড়িতে ডেকেছিলেন প্রসেনজিৎ। সেখানেই ‘দোস্তজী’র টিমকে ডেকে নিবেদনার কথাটি জানান। কথক টকিজের প্রযোজনায় তৈরি ছবিতে অভিনয় করেছেন আরিফ সেখ, আশিক সেখ, হাসনাহেনা মণ্ডলের মতো শিশুশিল্পীরা। সিনেম্যাটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলেছেন তুহিন বিশ্বাস। প্রত্যেকে উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিতের বাড়িতে। ছিলেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী এবং অভিজিৎ গুহ।
[আরও পড়ুন: ‘আমার টুইটার ফেরত চাই!’ মালিকানা বদল হতেই এলন মাস্কের কাছে আবদার কঙ্গনার]
এর আগে সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিনিধিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানান, তাঁর সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত। ২০১৩ সালে গল্প নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। ২০১৪ সালে চিত্রনাট্যের প্রথম ড্রাফ্টের কাজ শেষ হয়। গ্রামে থাকতে গিয়ে পরিচালক লক্ষ করেছিলেন, ভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যে একটা ভারসাম্য ছিল সেটা খুব আস্তে আস্তে বদলেছে। এবং ছোট ছোট জেশ্চারে সেটা প্রকাশ পায়। এবং এই ভারসাম্য আগের মতো নেই কিংবা থাকতে দেওয়া হয়নি। আগে যেভাবে বিজয়ার মিষ্টি কিংবা ইদের শিমুই দেওয়া-নেওয়া হত এখন সেভাবে হয় না। কোন পৃথিবী আমরা ছোটদের কাছে রেখে যাচ্ছি! এই সবকিছুই প্রসূণের অবচেতনে প্রভাব ফেলেছে এবং এই গল্প লিখতে সাহায্য করেছে।
লোকেশনের রেইকি করে ফেরার সময় দুই শিশুশিল্পী আরিফ ও আশিককে দেখতে পান। আশিকের বাবা কাঠের কাজ করে, আরিফের বাবা ইটভাটায় কাজ করে। অনেক সাধ্যসাধনার পর দু’জনকে সিনেমায় অভিনয় করার জন্য রাজি করাতে পেরেছেন পরিচালক। তাঁর এই পরিশ্রম যে সার্থক তা আন্তর্জাতিক পুরস্কারের তালিকাই বলে দিচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম ইউনেস্কোর সিফেজ প্রাইজ।