রমেন দাস: উই ওয়ান্ট জাস্টিস! যে স্লোগান হিল্লোল তুলেছিল নিরন্তর। যে আন্দোলন চমকে দিয়েছিল দেশকে, সেই দাবি মেশানো পথের লড়াইয়ের মুখরা সৃষ্টি করলেন আরও এক ইতিহাস! আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-পড়ুয়া অনিকেত মাহাতো, লহরী সরকার, রক্তিম মজুমদাররা কাজে যোগ দিয়েই করে ফেললেন অস্ত্রোপচার। ট্রমা কেয়ারের (Trauma Care) অস্থায়ী জরুরি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে একাধিক অস্ত্রোপচারে শামিল হলেন তিন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকও।
অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকরা। বাম দিক থেকে লহরী সরকার, অনিকেত মাহাতো, রক্তিম মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।
এদিন অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকে আংশিক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে কাজে যোগ দেন তাঁরা। আন্দোলনের 'এপিসেন্টার' আর জি কর হাসপাতালের (R G Kar Hospital) জরুরি বিভাগে কাজ শুরু করেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। ডিউটিতে দেখা যায় কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda), অনিকেত মহাতোদের (Aniket Mahato)। এদিন আর জি করের জরুরি বিভাগে আসেন বহু রোগী। যার মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে দুইয়ের বেশি অস্ত্রোপচার হয় বলে খবর। একটি হার্নিয়া সম্পর্কিত, অন্যটি অ্যাপেন্ডিক্স। শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ হার্নিয়া অপারেশনের সময় রীতিমতো স্বমহিমায় ফের ফেরেন লহরী, রক্তিম, অনিকেতরা। অ্যানাস্থেসিয়ার চিকিৎসক-পড়ুয়া অনিকেতের উপস্থিতিতে লহরী, রক্তিমরা অস্ত্রোপচার করেন ওই রোগীর। প্রায় ২০০-র বেশি রোগীর চিকিৎসা হয় জরুরি বিভাগে।
শুধু আর জি কর নয়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও অন্যদিনের তুলনায় ভিন্ন ছবি দেখা যায়। ৩০০-র বেশি রোগী, একাধিক অস্ত্রোপচারে জমজমাট থাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিশা বসু বলেন, "আমরা কাজে যোগ দিয়েছি। কাজ চলছে ফের। কিন্তু আমাদের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন সেই বিষয়টিও চলবে সমান তালে।'' প্রায় একই সুরে জুনিয়র চিকিৎসক শিভম, অভিষেকরাও দাবি করেন, ''আমরা চিকিৎসক আমাদের প্রথম কাজ রোগী দেখা। কিন্তু যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, সেই লড়াইয়ে থামছি না।'' অন্যদিকে আর জি করের (RG Kar Hospital) জরুরি বিভাগে আসা এক রোগীর মা লক্ষ্মী দাস জানান, "আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসা পেতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। ডাক্তারবাবুরা খুব ভালো দেখছেন।"