ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: হারানো জনসমর্থন উদ্ধার করতে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ (Bharat Jodo Yatra) করেছে কংগ্রেস। দেশের এপ্রান্ত-ওপ্রান্ত স্রেফ পায়ে হেঁটে ঘুরেই জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর পদযাত্রায় শামিল ছিলেন কতশত কংগ্রেস সমর্থক, কর্মী। তাঁরাও হেঁটেছেন কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর। আর তারই পুরস্কার মিলল এবারের AICC’র নতুন তালিকায়। সেখানে জ্বলজ্বল করছে ভারত জোড়ো যাত্রায় অংশ নেওয়া কর্মীদের নাম। তাঁরা এবার AICC সদস্য। বাংলা থেকে এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন পূজা রায়চৌধুরী। অথচ আরেক বঙ্গসন্তান কিরণ ছেত্রী গোটা যাত্রায় শামিল থাকা সত্ত্বেও বাদ পড়লেন। আর এই ‘বৈষম্যে’ দলের অন্দরেই রাজনীতিকরণের ইঙ্গিত দেখছেন সাধারণ কর্মীরা। তবে পূজা দারুণ খুশি। বলছেন, ”জানতাম আমি যোগ্য, তাই সুযোগ পেয়েছি।”
পূজা রায়চৌধুরী এবার ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রাহুলের সহযাত্রী হয়েছিলেন। পূর্ব প্রতিশ্রুতিমতো তাঁকে AICC’র সদস্য পদ দেওয়া হল। তিনি ভারত যাত্রীর কোর টিমে ছিলেন। তাই AICC সদস্য হওয়ার অগ্রাধিকার পেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কলকাতা থেকে পূজা রায়চৌধুরীর পাশাপাশি শিলিগুড়ি থেকে কিরণ ছেত্রী স্থায়ী ভারত যাত্রী ছিলেন। কিন্তু এআইসিসি তালিকায় নাম নেই কিরণের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে তেমন সংযোগ নেই। বরং তিনি দীপা দাশমুন্সি ঘনিষ্ঠ এবং পূজার সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। ভারত যাত্রী হলেও তাঁর নাম রেকমেন্ড করা হয়নি। আর পূজা সরাসরি হাইকম্যান্ড মনোনীত।
২০২২ সালের বিধাননগর পুরভোটে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়াই করেছিলেন পূজা। ত্রিপুরা মহিলা কংগ্রেসের ইনচার্জ। এবার তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার আরও এগোল একধাপ। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সদস্য হলেন পূজা। এদিকে, দুই বর্ষীয়ান নেতা হাফিজ আলম সৈরানি (প্রাক্তন মন্ত্রী) এবং আলি ইমরান রামজ ওরফে ভিক্টর (প্রাক্তন ফব বিধায়ক) AICC সদস্যপদ না পাওয়া নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বিকেল গড়াতেই অধীর চৌধুরী তাঁদের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিতে আনলেন। সৈরানিকে প্রদেশ কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ভিক্টরকে কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি করা হল। মাসখানেক আগে দু’জনে কংগ্রেসে যোগ দেন।
[আরও পড়ুন: ‘শত্রু’ চিহ্নিত, তবু মার্চ পর্যন্ত থাকবে অ্যাডিনোর দাপট, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের]
নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও ফ্রন্টাল অর্গানইজেশনের চেয়ারম্যানদের নাম থাকে কো-অপট হিসেবে। সেই হিসেবে সেবাদলের চেয়ারম্যান রাহুল পান্ডের নাম কো-অপ্টে থাকলেও ছাত্র পরিষদের সৌরভ প্রসাদ সেখানে নির্বাচিত সদস্য। তাহলে কি অধীর ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই এই পুরস্কার? এদিকে এআইসিসি থেকে বাদ পড়েছে কংগ্রেসের আইনজীবী ঋজু ঘোষালের নাম। প্রদেশ সূত্রে খবর, অধীরের দ্বিতীয় স্ত্রী অতসী চৌধুরীর আত্মীয় ঋজু। আগে উভয়ের ঘনিষ্ঠতা থাকলেও এখন দূরত্ব বেড়েছে। তাই বাদ ঋজু।