রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একাধিক পুরনো ও পরিচিত মুখনেতাদের বাদ দিয়ে নয়া রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে বঙ্গ বিজেপি। আর তারপর থেকেই পদ খোয়ানো নেতারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন, কেউ আবার ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।
সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বুধবার নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়। আর সেই কমিটি থেকে পুরোপুরি বাদ পড়েন সায়ন্তন বসু, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী, রাজকমল পাঠকদের মতো দলের পুরনো সৈনিকরা। যা নিয়ে বিস্মিত অনেকেই। আবার যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি থেকে বাদ পড়েছেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। একাধিকবার বিতর্কে জড়ানো সৌমিত্রর বাদ পড়াটা ছিল অবশ্য সময়ের অপেক্ষা। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদ পার্টির অন্যতম সহ-সভাপতি করা হয়েছে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দু’দিনের সফরে গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রী, করবেন প্রশাসনিক বৈঠক]
তপন শিকদারের সময় থেকে বিজেপির (BJP) সঙ্গে রয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া, আরেক সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীও বঙ্গ বিজেপির পরিচিত মুখ। এই দু’জনকে কমিটিতে না রাখা নিয়ে পুরনো নেতা-কর্মীরা দলের অন্দরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়া সদ্য প্রাক্তন সহসভাপতি রাজকমল পাঠক তো প্রকাশ্যেই বলেছেন, পুরনোদের প্রয়োজন বোধহয় ফুরিয়ে গিয়েছে দলে। বাদ পড়া ক্ষুব্ধ এক নেতার কথায়, নতুন রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন পুরনো-নতুন মিলিয়ে কমিটি হবে। সেটা তো হয়নি। দক্ষ সংগঠক এবং পরিশ্রমী নেতা সায়ন্তন বসুকে কমিটিতে না রাখা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে দলে।
বিধানসভা নির্বাচনে স্বপ্ন ভঙ্গ। এরপর উপনির্বাচনগুলিতে বড় ব্যবধানে হার। আর সব শেষে কলকাতা পুরভোটেও হতাশাজনক ফল। দলের মধ্যে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে, তৃণমূল ছেড়ে দলে আসাদের নিয়ে ক্ষুব্ধ বড় অংশ। অনেকেই দল ছাড়ছেন, অনেকে আবার নিষ্ক্রিয়। আবার সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠছে। সব কিছু সামাল দিতে নাকানি-চোবানি খেতে হচ্ছে শীর্ষ নেতাদের। বিধানসভা ভোটের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়েই দলবদলুদের বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হয়নি নতুন কমিটিতে। দলের নতুনদের প্রাধান্য দিয়ে নয়া টিম সাজানো হলেও আগামীদিনে দলের ছন্নছাড়া অবস্থা কতটা কাটিয়ে তুলতে পারবে এই রাজ্য নেতারা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সামনেই রাজ্যে একাধিক পুরসভার ভোটও দরজায় কড়া নাড়ছে। একের পর এক ভোটে বিপর্যয়ের পর নিজের নতুন টিম দিয়ে রাজ্যে দলকে ঘুরে দাঁড় করানোটা এই মুহূর্তে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।