সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক পদ এক পেনশনের দাবিতে প্রাক্তন সেনাকর্মীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে দিনভর রাজনৈতিক নাটকের সাক্ষী থাকল রাজধানী৷ মৃ্তের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধা পেলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ বাধা দেওয়া হয় দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকেও৷
এক পদ এক পেনশন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রাম কিষাণ গ্রেওয়াল নামে এক প্রাক্তন সেনাকর্মী৷ দিল্লির এক সরকারি ভবনেই মঙ্গলবার আত্মহত্যা করেন তিনি৷ সুইসাইড নোটে তিনি জানিয়ে যান, সরকার প্রতিশ্রুতিমতো বর্ধিত পেনশন এখনও দেয়নি৷ এর আগে এ নিয়ে যন্তর মন্তরে ধরনাতেও বসেছিলেন তিনি৷ তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ আর তারপরই এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
বুধবার রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ এর আগে দিওয়ালির সময় সেনাদের এক পদ এক পেনশনের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন তিনিই৷ প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে চিঠিও লিখেছিলেন৷ তবে এদিন তাঁকে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি৷ তাঁকে আটক করে মদন মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ এর আগে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকেও আটক করা হয় একই কারণে৷ এমনকী মৃত সেনাকর্মীর ছেলেকেও প্রতিবাদের কারণে আটক করেছে পুলিশ৷
আর এ নিয়েই চলতে থাকে রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ অভিযোগের সুরে সুর মিলিয়েছেন রাহুল ও কেজরিওয়াল৷ দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ কতটা বিপন্ন তা এই ঘটনাই তুলে ধরছে বলে মত তাঁদের৷ কেন্দ্রর বিরুদ্ধে গুণ্ডাগিরির অভিযোগ তোলেন কেজরি৷ অন্যদিকে কটাক্ষ করে রাহুল বলেন, নতুন ভারত তৈরি হচ্ছে যেখানে এইসব ঘটনা ঘটছে৷
যদিও পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশের মানে এই নয় যে সবকিছুতেই রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটানো৷ হাসপাতালে কোনও নেতাকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ পুলিশের মতে, নেতাদের বোঝা উচিত যে হাসপাতাল বিক্ষোভ দেখানোর জায়গা নয়৷ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগযোগ করে বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার কারণেই মৃতের ছেলেকেও আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয় পুলিশের পক্ষে৷
যদিও এ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল-কেজরি৷ নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও মনীশ সিসোদিয়াকে কেন ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন করেন খোদ রাহুলই৷ শহিদের সন্তানকে আটক করা নিয়েও তা সরব হন তিনি৷ মৃতের পরিবারের দাবি, যে কারণে সেনাকর্মী আত্মহত্যা করেছেন তা পূরণ করা হোক৷ যদিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সেনাকর্মী যে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন এরকম কোনও অনুরোধ দফতরে জমাই পড়েনি৷ সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কৃতিত্বের সিংহভাগ দখল করেছিল শাসকদল৷ তার প্রমাণ চেয়ে রীতিমতো বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রাহুল-কেজরি৷ সেদিক থেকে নজর ঘোরাতেই বিজেপি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে এক পদ এক পেনশন প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন রাহুল৷ সেনা অভ্যন্তরেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে৷ ঠিক এরপরই একই ইস্যুতে সেনাকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনা বিরোধীদের খানিকটা রাজনৈতিক সুবিধা পাইয়ে দিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
#WATCH: Inside visuals of the Mandir Marg Police station (Delhi), where Congress VP Rahul Gandhi has been detained. pic.twitter.com/Tr0F34XMTn
— ANI (@ANI_news) November 2, 2016
এদিকে রাহুল ও মণীশ সিসোদিয়াকে আটকের তীব্র নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ রাজ্যের তরফে প্রতিনিধিরা দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
The post সেনাকর্মীর আত্মহত্যা ঘিরে রাজনীতিতে সরগরম রাজধানী appeared first on Sangbad Pratidin.