ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) এখন দিল্লিতে। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে যাত্রার বঙ্গপর্ব। আনুষ্ঠানিক নাম ‘সাগর থেকে পাহাড়’। কাকতালীয় হলেও, ঠিক ৩৫ বছর আগে এই ২৮ ডিসেম্বরই শুরু হয়েছিল আরও এক ‘সাগর থেকে পাহাড়’ কর্মসূচি।
আটের দশকের শেষভাগ। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সুবাস ঘিসিংয়ের আন্দোলনে পাহাড় উত্তাল। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অভিযোগ, মুখে বললেও পাহাড় শান্ত করতে কোনও পদক্ষেপ করেননি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সাবধানবাণী নিয়ে ১৯৮৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর পালটা আন্দোলনে নামে যুব কংগ্রেস। প্রদেশের সভাপতি তখন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। যুব সভাপতি প্রদ্যোৎ গুহ। কর্মসূচির নাম রাখা হয় ‘সাগর থেকে পাহাড়’।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর সভায় বক্তা ধানতলা ধর্ষণকাণ্ডের অন্যতম আসামী! তুলোধোনা কুণাল ঘোষের]
সাড়ে তিন দশক পর ফের ‘সাগর থেকে পাহাড়’ কর্মসূচি নিয়ে নামতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রেক্ষিত ভিন্ন! আন্দোলনের ধারেও আকাশ-পাতাল ফারাক। বর্তমান কর্মসূচি কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা পশ্চিমবঙ্গের হৃদয়রেখা ধরে এগোব। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থেকে কার্শিয়াং–পশ্চিমবঙ্গের এই হৃদয়রেখাই আমাদের যাত্রাপথ। তখনই পুরনো নামটা সবার মাথায় আসে।’’ প্রদ্যোৎ গুহর কথায়, ‘‘রাহুল গান্ধীর ডাকে বঙ্গের কর্মসূচির নামে রাজীব গান্ধীর উত্তরাধিকার! আমরা কৃতজ্ঞ!’’
সেবার যুব কংগ্রেসের ডাকা কর্মসূচির কথা বলতে গিয়ে প্রদ্যোৎবাবু জানাচ্ছেন, ঘিসিং হুঁশিয়ারি দেওয়ায় রাজীবজি আশঙ্কায় ছিলেন। কিন্তু তাঁকে শেষ পর্যন্ত রাজি করিয়ে পথে নামে যুব কংগ্রেস। সাগর থেকে ১৬০০ কিলোমিটার হেঁটে কার্শিয়াং পৌঁছলে ঘিসিং যাত্রা আটকে দেন। শেষে রাজীব গান্ধীর হস্তক্ষেপে ঘিসিংকে শামিল করে যুব কংগ্রেসের মিছিল পৌঁছয় দার্জিলিং। এই সাফল্য বাহবা কুড়িয়েছিল রাজীব গান্ধীর। প্রদ্যোৎবাবুর কথায়, ‘‘রাজীবজি বলেছিলেন, অখণ্ডতার বিরুদ্ধে আপনারা যেটা করেছেন, স্বাধীনতার আগে এ জিনিস হয়েছিল। আমি উৎসাহিত। আপনাদের পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। চিঠিটি আজও সযত্নে রাখা।’’ আগামিকাল সাগরে কপিলমুনির আশ্রমে পুজো পর্বে থাকার কথা প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী, এআইসিসির দুই নেতা দিগ্বিজয় সিং ও জয়রাম রমেশের। ৩৫ বছর আগে প্রিয়রঞ্জনের অনুরোধে সাগর গিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজিত পাঁজা। এবার যাত্রা শেষ হওয়ার কথা ২৩ জানুয়ারি। ২৬ জানুয়ারি জাতীয় স্তরে রাহুল গান্ধীর কর্মসূচি শেষ হলে শুরু হবে ‘হাতে হাত’।