সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “দল যেভাবে চাইবে, সেভাবে কাজ করব”, ২৩ জন বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। রাহুলের সেই মন্তব্যের পর অনেকের ধারণা হয়েছিল, তাহলে বোধ হয় ফের কংগ্রেসের ব্যাটন নিজের হাতে তুলে নিতে রাজি হয়ে গেলেন রাজীব-তনয়। কিন্তু ভিতরের খবর বলছে অন্য কথা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সুত্রের খবর, রাহুল গান্ধীকে এখনও দ্বিতীয়বার কংগ্রেস সভাপতি পদে বসার জন্য রাজি করানো যায়নি। বরং তিনি যে ফের সভাপতি হবেন না, সেটাই প্রায় নিশ্চিত। তাঁর বিকল্প হিসেবে ‘প্ল্যান বি’র কথাও ভেবে ফেলেছে কংগ্রেস।
আসলে, ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে হারের দায় নিয়ে রাহুল পদত্যাগ করার পর থেকেই দিশেহারা কংগ্রেস (Congress)। ওয়ানড়ের সাংসদকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু কিছুতেই নিজের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে রাজি হননি রাহুল। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এবার গান্ধী পরিবারের বাইরে কাউকে সভাপতি করা উচিত দলের। কিন্তু, গান্ধীদের বিকল্প কংগ্রেস খুঁজে পায়নি। শেষমেশ একপ্রকার জোর করেই অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রীর পদে বসানো হয়েছে সোনিয়া গান্ধীকে। সেই পদেও সোনিয়ার মেয়াদ প্রায় দু’বছর হতে চলল, কিন্তু এখনও জোগাড় হয়নি স্থায়ী সভাপতি। এর মধ্যে দলের একাংশ নেতৃত্বে বদল চেয়ে জেহাদও ঘোষণা করেছে। স্থায়ী সভাপতির দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের বহু নেতা। সম্প্রতি এই বিদ্রোহী শিবিরের যে ২৩ নেতা সোনিয়া গান্ধীকে নেতৃত্বে বদল চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাহুল। সোনিয়া এবং গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের উপস্থিতিতে হওয়া সেই বৈঠকেও রাহুলকে অনুরোধ করা হয় সভাপতির পদে ফিরে আসতে। কিন্তু এখনও নিমরাজি তিনি। আর রাহুল যে সভাপতির পদে ফিরতে চান না, সেই বার্তা স্পষ্ট করে দিতেই সম্ভবত কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: আলোচনায় কাজ হয়নি, সীমান্তে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন! স্বীকারোক্তি রাজনাথের]
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল রাহুল যদি নেহাতই রাজি না হন, তাহলে কী হবে? কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সেক্ষেত্রে একটি ‘প্ল্যান বি’ তৈরি করা হয়েছে। রাহুল যদি রাজি না হন, তাহলে একজনের বদলে ক্ষমতা চারজনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। দেশের চার প্রান্ত থেকে চারজন সহ-সভাপতি নিয়োগ করা হবে। এবং এঁদের মাথায় অভিভাবকের মতো বসিয়ে রাখা হবে সোনিয়া গান্ধীকে। যাতে এঁদের একত্রিত করে রাখা যায়। সোনিয়া (Sonia Gandhi) নামে সভাপতি হলেও আসল সিদ্ধান্ত নেবেন এই চারজনই। এবং নিজেদের জোনে দলের ভালমন্দের দায় বর্তাবে এই চারজনের উপরই। এই চারজনের অধীনে আবার চারজন করে সাধারণ সম্পাদক কাজ করবেন। তাঁদের ভাগ করে দেওয়া হবে বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্ব। সেই সঙ্গে এআইসিসির তরফে সব রাজ্যের পৃথক পর্যবেক্ষক তো থাকছেনই। যদিও, এই পরিকল্পনা কার্যকর করার আগে রাহুলকে রাজি করানোর সাধ্যমতো চেষ্টা করবে কংগ্রেস।