সুব্রত বিশ্বাস: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই পা বাড়াতে চায় রেল। ২০০১ সালে প্রথমবার রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আয় বাড়াতে ভাড়া ছাড়া বিকল্প পথ খোঁজ করুন। আয়ের জন্য হাতিয়ার করতে হবে বিজ্ঞাপনকেই। এজন্য রেলের প্রতিটি ইঞ্চিকে কাজে লাগাতে হবে। সাধারণ মানুষের উপর চাপ যাতে না বাড়ে সেজন্য ভাড়া বাড়ানোর পদ্ধতি কার্যকর না করে ঘুরপথে আয় বাড়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এই বিজ্ঞাপন বাড়ানোর পদক্ষেপ করেছিলেন সেদিন। তাঁর সেই চিন্তা এখন পূর্ণমাত্রায় কার্যকর করতে চাইছে রেল।
[চিকিৎসক বা ওষুধপত্র নয়, পরিষ্কার শৌচালয়ই রুখতে পারে প্রাণহানি]
উদাসীনতায় রেল চত্বরে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মোহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি। ফলে বিজ্ঞাপন থেকে রেলের আয় একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। যাত্রীভাড়া থেকে আর উপযুক্ত আয়ের আসা নেই। বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাড়াতে এবার প্রতিটি জোনের ম্যানেজারদের রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্দেশ দিলেন, আদা জল খেয়ে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করুন। বোর্ড চেয়ারম্যান অশ্বিন লোহানি রীতিমতো এই বিষয়ক আয়ের পরিসংখ্যান দেখিয়ে এই নির্দেশ দেন। বিজ্ঞাপন থেকে রেলের আয় ভয়ানকভাবে কমেছে ২০১৬-১৭ সালে। ওই বছরে আয় হয়েছিল ১০,৩৩৮ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ সালে আয় কমে চলে আসে ৮৬০ কোটিতে। ২০১৮-১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত আয় হয়েছে ৩২.৬৫ কোটি টাকা। যেখানে টার্গেট ছিল ১২০০ কোটি টাকা। রেলের আয় তলানিতে আসায় যাত্রী পরিষেবা যে প্রচণ্ডভাবে মার খাচ্ছে তাও স্পষ্ট হয়ে উঠছে রেলের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই।
[ট্রেনের খাবারে পোকা, রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা]
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন লোহানি। আগামী দশ বছরে বিজ্ঞাপন থেকে রেলকে আয় করতে হবে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে সব রকমের প্রক্রিয়াকে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে- সব মানের স্টেশনে, ওভারব্রিজে, আন্ডারব্রিজে, লেভেল ক্রসিং, রেল আবাসন চত্বর, ওয়ার্কশপ, প্রোডাকশন ইউনিট, লাইনের ধারে। লক্ষ্যপূরণের এই চেষ্টা সফল হওয়ার নয় বলে মনে করেছে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি। রেলের বিজ্ঞাপনের যা রেট তেমন প্রভাব পড়ে না ব্যবসায়। ফলে আগ্রহ কমছে রেল চত্বরে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে বলে তাঁরা মনে করেছেন।
The post আয় বাড়াতে মমতা মডেলেই হাঁটতে চায় রেল appeared first on Sangbad Pratidin.