সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেন বা স্টেশন, স্থান যাই হোক না কেন যাত্রী অসুস্থ হলে যেন মৃত্যু না ঘটে। এমনই কড়া নির্দেশের নাগপাশে রেলকর্মীদের বাঁধল রেলমন্ত্রক। রানিং স্টাফ ও স্টেশনের সব ধরনের কর্মীকে এজন্য এবার চিকিৎসার প্রাথমিক পাঠ নিতে হবে। নতুন চাকরি পাওয়া ওই ক্যাটাগরির কর্মীদের এই পাঠ নিয়ে যেমন কর্মজীবনে ঢুকতে হবে, তেমনি তাঁদের প্রতি তিন বছর অন্তর তা আবার ঝালিয়ে শংসাপত্র নিতে হবে। এই আইনকে এবার বাধ্যতামূলক করা হল। রানিং স্টাফদের মধ্যে রয়েছে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও গার্ড। স্টেশন কর্মীদের মধ্যে স্টেশন ম্যানেজার, স্টেশন মাস্টার, এএসএম, পোর্টার, পয়েন্টম্যানরা।
এই প্রশিক্ষণ এবার বাধ্যতামূলক করার কারণ সম্পর্কে রেল বোর্ড স্পষ্ট করেছে, ট্রেনে বা স্টেশনে স্বভাবতই যাত্রী অসুস্থ হতে পারেন। যে কোনওরকমের অসুস্থতার মোকাবিলা করার মতো দক্ষতা না থাকার কারণে মারা যান বহু মানুষ। অথচ চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে স্টেশনে ও ট্রেনে। শুধু কীভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হবে কোন ক্ষেত্রে, কেমনভাবে সেই জ্ঞানের অভাব রয়েছে কর্মীদের মধ্যে। ফলে বহু যাত্রী মারাও যান এই সামান্য অজ্ঞতার কারণে। এজন্য এবার এই প্রাথমিক চিকিৎসার পাঠ বাধ্যতামূলক করা হল। এই পাঠে আরও উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য আগামী ৪ নভেম্বর বিদেশি প্রতিনিধিরা আসছেন রেলকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে।
[‘মোদির ভাষণের জন্যই কি দেরিতে ঘোষণা বাজপেয়ীর মৃত্যুর খবর?’]
প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণে হাড় ভাঙা, রক্তপাত, অজ্ঞান হওয়া, আগুনে পোড়া, বিষ খাওয়ার পরই চিকিৎসা করতে হবে কী করে তা শেখানো হয়। বহু স্টেশনে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থাকলেও সেখানে প্রশিক্ষণ তেমন না থাকায় যাত্রীরা প্রকৃত প্রাথমিক চিকিৎসা পান না। খড়গপুর রেলকর্মীদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন সেন্ট জন অ্যাম্বুল্যান্সের ডিভিশন্যাল কমান্ডার অসীম নাথ। তিনি বলেন, বহু যাত্রী অজ্ঞান হয়ে যান। কার্ডিও পালমোনারি রিসাসসিশন (সিপিআর) করে তাঁদের বাঁচানো সম্ভব। বুকে চাপ দিয়ে ও মুখে ফুঁ দিয়ে অজ্ঞান মানুষকে বাঁচানো সম্ভব। এই বেসিক লাইফ সাপোর্ট অজ্ঞান হওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে শুরু করতে পারলে মানুষের জীবন রক্ষা পায়। এই ‘গোল্ডেন পিরিয়ডে’ সিপিআর শুরু করতে পারেন না শুধু অজ্ঞতার কারণেই।
তাই প্রকৃত প্রশিক্ষণই বাঁচাতে পারে মানুষকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরই স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর পদ্ধতিও শিখতে হবে। যেমন বহু ক্ষেত্রে স্ট্রেচার না থাকলে কীভাবে অসুস্থকে হাসপাতালে নিতে হবে চেয়ারকে ব্যবহার করা থেকে চাদর, গামছা নিদেনপক্ষে জামাকে স্ট্রেচার বানানোর পদ্ধতিও শেখানো হবে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রকৃত চিকিৎসা চালুতেও কোনওরকম খামতি থাকবে না। শিয়ালদহ স্টেশনের পাশেই বি আর সিং হাসপাতাল। বি আর সিং হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাক্তার গৌতম দাশগুপ্ত বলেন, আপৎকালীনভাবে অসুস্থ যাত্রীকে যা যা চিকিৎসা করার দরকার তা সবই করবেন চিকিৎসকরা।
[আরও বিপাকে মেজর গগৈ, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ সেনা আদালতের]
The post প্রাথমিক চিকিৎসার পাঠ নিতে হবে কর্মীদের, যাত্রী সুরক্ষায় উদ্যোগ রেলের appeared first on Sangbad Pratidin.